বৈজ্ঞানিক আইনস্টাইন বলেন,
“Science without religion is lame, religion without science is blind.” ( from Einstein’s essay “Science and religion,” published in 1954.)
অর্থ- ধর্ম ছাড়া বিজ্ঞান পঙ্গু আর বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম অন্ধ। বর্তমান একবিংশ শতাব্দীতে সবচেয়ে আলোচিত বা সমালোচিত Theory গুলোর মধ্য থেকে একটি হল-বিবর্তনবাদ।এ মতবাদটি প্রচারের শুরু থেকে যথেষ্ট ত্রুটিপূর্ণ।আজকে আপনাদের সামনে যুক্তির কষ্টিপাথর ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে বিবর্তনবাদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করব।একটু সময় নিয়ে ধৈর্যের সাথে সম্পূর্ণ প্রবন্ধটি পড়ার চেষ্টা করুন তাহলে বিবর্তণবাদ সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা অর্জিত হবে।
★বিবর্তনবাদের সংজ্ঞাঃ
বিবর্তনবাদ হল-এমন একটি Theory যেখানে মনে করা হয় -সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই জীবন্ত বস্তু অস্তিত্বে এসেছে দৈবাৎ কাকতালীয়ভাবে এবং পরবর্তিতে উন্নত হয়েছে আরও কিছু কাকতালীয় ঘটনার প্রভাবে। প্রায় ৩৮ বিলিয়ন বছর আগে, যখন পৃথিবীতে কোন জীবন্ত বস্তুর অস্তিত্ব ছিল না, তখন প্রথম সরল এককোষী জীবের উদ্ভব হয়। সময়ের পরিক্রমায় আরও জটিল এককোষী এবং বহুকোষী জীব পৃথিবীতে আসে। প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সরল কোষ ধীরে ধীরে জটিল হয়ে এবং সরল জীব টিকে থাকার জন্য প্রাকৃতিক নিয়মেই পরিবর্তিত হয়ে জটিল অবস্থার রূপ নেয়।’ সংক্ষেপে বলতে গেলে, ”Survival of the fittest” পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়িয়ে নেওয়ার জন্য জীব সরল থেকে জটিল হয়। এই তত্ব মতে মানুষের উৎপত্তি হয়েছে বানর জাতীয় মানুষ (Ape) থেকে, পর্যায় ক্রমে মিলিয়ন বছরের মাধ্যমে।
★বিবর্তনবাদের প্রবক্তাঃ
বিবর্তন তত্ত্ব সর্ব প্রথম ফ্রেন্স জীববিজ্ঞানী ল্যামার্ক তার Zoological Philosophy (1809) নামক গ্রন্থে তুলে ধরেন। লামার্ক ভেবেছিলেন যে, প্রতিটি জীবের মধ্যেই একটি জীবনী শক্তি কাজ করে যেটি তাদেরকে জটিল গঠনের দিকে বিবর্তনের জন্য চালিত করে। তিনি এটাও ভেবেছিলেন যে, জীবেরা তাদের জীবনকালে অর্জিত গুণাবলি তাদের বংশধরে প্রবাহিত করতে পারে। বিংশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে DNA এর গঠন আবিষ্কারের ফলে লামার্কের তত্ত্বের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার দ্বারা বাতিল হয়ে গেছে এবং তা একটি ত্রুটিপুর্ণ ধারণা হিসেবে ইতিহাসে রয়ে গেছে। এর পরে আসেন প্রাকৃতিক বিজ্ঞানী চার্লস রবার্ট ডারউইন। তার দেয়া তত্ত্বটি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় এবং এই তত্ত্বটি Darwinism বা ডারউইনের বিবর্তনবাদ নামে পরিচিত।
★ডারউইনিজমের জম্মঃ
ডারউইন ১৮৩১ সালে পাঁচ বছরের জন্য সমুদ্র ভ্রমণে বের হন। এই ভ্রমণে তিনি বিভিন্ন প্রজাতির জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে প্রচন্ড প্রাভাবিত হন, বিশেষ করে গালাপাগোস দ্বীপের Finch পাখির ঠোঁট দেখে। এই পাখি গুলোর বিভিন্ন রকমের ঠোঁট দেখে তিনি মনে করেন যে পরিবেশের সাথে অভিযোজনের ফলাফল।
তার এই ভ্রমণ শেষে তিনি লন্ডনের একটি পশু মার্কেট পরিদর্শন করেন। তিনি এখানে দেখতে পান যে Breeders রা সংকরয়নের মাধ্যমে নতুন চরিত্রের গরু উদ্ভাবন করছে। এই সব অভিজ্ঞতা লাভের পর তিনি ১৮৫৯ সালে তার একটি বই প্রকাশ করেন The Origin of Species নামে। এই বইয়ে তিনি তার মতবাদকে তুলে ধরেন। তিনি এখানে বলেন, সকল প্রজাতি একটি কমন পুর্বপুরুষ থেকে এসেছে (অবশ্য এই কমন পূর্বপুরুষ টি কোথা থেকে এসেছে তার ব্যাখ্যা তিনি দেননি)।
★প্রানের উৎপত্তিঃ
ডারউইন তার বইয়ে কোথাও প্রাণের উৎপত্তি নিয়ে কথা বলেননি। তখনকার আমলের সরল মাইক্রোস্কোপ দিয়ে জীব কোষের গঠন সম্পর্কে খুব কমই জানা গিয়েছিল। তখন জীব কোষের গঠনকে খুবই সরল মনে করা হত। তাই তার মতবাদ, জড় বস্তু থেকে জীবের উৎপত্তি তখন খুবই জনপ্রিয়তা পায়। তখন মনে করা হত গম থেকে ইদুরের উৎপত্তি। তারা এটা প্রমাণ করার জন্য গবেষনাগারে একটুকরা কম্বলের উপর কয়েক মুট গম ছড়িয়ে দেয়া হল এবং প্রত্যাশা করা হল যে, এখান থেকে রহস্যজনক ভাবে ইদুরের সৃষ্টি হবে। গম পচা শুরু হলে সেখানে কত গুলো কীট দেখা যায়। এই কিট গুলো আলাদা করে নয়ে বলা হয় যে গমের মত জর পদার্থ থেকে প্রায় একই আকৃতির কীট সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কিছু দিন পর আণুবীক্ষণিক গবেষনা থেকে জানা যায় যে এই কীট গুলো এমনি এমনি সৃষ্টি হয়নি বরং গমের গায়ে পুর্ব থেকে এই লার্ভা লেগে ছিল। ডারউইনের বই বের হওয়ার পাঁচ বছর পর বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর বৈজ্ঞানিক যুক্তি প্রমাণের ভিত্তিতে ডারউইনের বিবর্তনবাদের অসারতা প্রমান করেন। তিনি বলেন, কোন বস্তুই নিজে নিজে সংঘটিত হতে পারে না।
★মিলারের experiment:
বিজ্ঞানী মিলার (১৯৫৩ সালে) এই পরীক্ষায় গ্যাস reaction এর মাধ্যমে কিছু organic molecule সংগ্রহ করেন যেগুলো প্রাচীন জলবায়ুতে অবস্থান করত বলে মনে করা হয়। সে সময় এই পরীক্ষাকে বিবর্তনবাদের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ বলে মনে করা হত। পরে এটাও ভুল প্রমাণিত হয়। কারণ গবেষনায় দেখা গেছে মিলার তার পরীক্ষায় যে গ্যাস use করেছেন তা তখনকার জলবায়ুতে অবস্থানকারী গ্যাস থেকে যথেষ্ট ভিন্ন।
★যুক্তির কষ্টিপাথরে বিবর্তনবাদঃ
বর্তমান সময়ে বিজ্ঞান এতটাই অগ্রসর যা তখনকার সময়ে ছিল না। তাই জেনেটিকস্ মাইক্রোবায়োলজি, এমব্রায়োলজি এ শাখাগুলো বিকাশের সাথে সাথে নতুন নতুন তথ্য উম্মেচিত হয় এবং বিবর্তনবাদ একটি পঙ্গু তত্ত্বের রূপ নেয়। এখানে কতগুলো যুক্তি দেওয়া হল যা বিবর্তনবাদকে একটি ভিত্তিহীন তত্ত্বে রূপান্তরিত করে।
যুক্তি নং ১ : স্লাইডেন এবং সোয়ান যারা কোষ তত্ত্বের প্রবর্তক তাঁরা বলেছেন ”Every cell comes from a pre-existing cell” প্রত্যেকটি কোষ শূন্য থেকে আসে না। তার অবশ্যই একটি মাতৃকোষ থাকে। ভারউইনের বিবর্তবাদ এটির ব্যাখ্যা দিতে পারে না যা কিভাবে জীবনের উৎপত্তি হল। আর সে জন্য বিবর্তনবাদ একটি ভ্রান্ত তত্ত্বে পরিণত হয়েছে।
যুক্তি নং ২ : DNA হচ্ছে জীবনের রাসায়কি ভিত্তি। এ DNA এর উপাদান ৫টি কার্বন, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও ফসফরাস। DNA গুলো অ্যামিনো এসিড তৈরী করে আর এই অ্যামিনো এসিডগুলো প্রোটিন তৈরী করে। আজকের বিজ্ঞান আমাদের বলে একটি DNA অনু যদি হঠাৎ করে তৈরী হত ( বিবর্তনবাদ অনুযায়ী) তবে এর সম্ভাবনা 1/10-268 যা শূন্যের কাছাকাছি। এমনকি বিশ্ব জগতের সব অনুপরমানু একত্রিত করেও একটি DNA তৈরী করা সম্ভব না। বর্তমান এত উচ্চমানের গবেষনাগারেও বিজ্ঞানীরা শূন্য থেকে কোষ তৈরী করতে সক্ষম না। সক্ষম না।
যুক্তি নং ৩ : Thermodynamics এর 2nd Law অনুযায়ী, প্রত্যেকটি সিস্টেম সুশৃঙ্খল অবস্থা থেকে বিশৃঙ্কল অবস্থার দিকে যায় যদি বাহিরের কোন শক্তি এটিকে নিয়ন্ত্রন না করে। ডারউইনের বিবর্তবাদ অনুযায়ী প্রাকৃতিক নিয়মেই সুশৃঙ্খল ভাবে সরল জীবগুলো জটিল অবস্থার রূপ নেয়। Thermodynamics এর সূত্রানুযায়ী, স্রষ্টার সুশৃঙ্খল পরিকল্পনা ছাড়া প্রাকৃতিক নিয়মে কখনোই সরল জীবগুলো জটিল অবস্থা লাভ করতে পারে না। তাই Tneromodynamics যা প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক সত্য তা বিবর্তনবাদকে অস্বীকার করে।
যুক্তি নং ৪: পৃথিবীর এ বিচিত্র প্রাণীর সমারোহ দেখে আমরা কখনোই ভাবতে পারি না মানুষের উৎপত্তি বানর থেকে। কেননা প্রত্যেকটি প্রাণীর ক্রোমোসোম সংখ্যা নির্দিষ্ট। এর কম বা, বেশি হলে প্রাণীটি তার অস্তিত্ব হারায়। বানরের ক্রোমোসোম থেকে মানুষে উৎপত্তি হওয়াটা বিজ্ঞানের কাছে হাস্যকর।
যুক্তি নং ৫: Muation বিবর্তনবাদের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। বিবর্তনবাদ অনুযায়ী সরীসৃপ হতে বিবর্তিত হলে এসেছে পক্ষীকূল। আজকের বিজ্ঞান প্রমাণ কর যে, Muation অর্থাৎ জীনের পরিবর্তনের মাধ্যমে কোনো জীবের বৈশিষ্ঠ্যের পরিবর্তন করা যায় কিন্তু কখনোই বাঘ থেকে হাতী তৈরী করা সম্ভব না। তাই বিবর্তনবাদ অনুযায়ী, সরীসৃপ থেকে পাখির উদ্ভবের ঘটনাটি অবৈজ্ঞানিক।
যুক্তি নং ৬: নৃতত্ত্ববিদরা মানুষের উৎপত্তির ধারাকে চারটি ভাগে ভাগ করেন। এগুলো হলঃ অস্ট্রালোপিথেকাস, হোমো ইরেকটাস হোমোএভিলাস এবং হোমোসেপিয়েনস। বিবর্তনবাদের সাথে এই স্তরগুলোর কোন মিল নেই যা এর অগ্রহণযোগ্যতার একটি কারণ।
যুক্তি নং ৭: সম্প্রতি নাসা থেকে দুটি মহাকাশ যান পাঠানো হয় মঙ্গল গ্রহে। সেখানে পানির উপস্থিতি দেখা যায়। কিন্তু সেখানে কোন জীবনের উৎপত্তি হয় নি। বিবর্তনবাদ অনুযায়ী, যেহেতু সেখানে জীবনের উৎপত্তি হওয়ার পরিবেশ ছিল সেখানে প্রাকৃতিক নিয়মে জীবনের বিকাশ ঘটার কথা। এর কারণ হল, বিবর্তনবাদ বলতে আসলে কিছু নেই। প্রত্যেকটি জিনিসই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়।
যুক্তি নং ৮: বিবর্তনবাদকে যারা সমর্থন করেন তারা ফসিল ( Fossil) গুলো থেকে যুক্তি দেখান। মানুষ ও Primate গোত্রের প্রাণীদের Skull গুলো নিয়ে সাদৃশ্য খুঁজে বের করে তারা মানুষের উৎপত্তি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। তাই আজ তারা সবচেয়ে বড় প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন কেননা জিরাফ এবং জেব্রার মত প্রাণীদের ক্ষেত্রে এ ফসিলগুলো উপর্যুক্ত সত্যতা প্রমাণ করে না। অন্য কোন প্রাণীদের ক্ষেত্রে সাদৃশ্য পাওয়া যায় নি।
যুক্তি নং ৯: বিবর্তবাদ অনুযায়ী প্রতিকূল পরিবেশে টিকে যাকার জন্য প্রাণীদের দৈহিক কাঠামোর পরিবর্তন ঘটে এবং জীবটি তার নিজস্বতা হারিয়ে অন্য একটি প্রজাতিতে পরিণত হয়। আজকের বিজ্ঞান বলে পরিবেশের সাথে সাথে জীবরে কিছু জীনগত পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে জীবটির কিছু বৈশিষ্ট্যর পরিবর্তন ঘটে কিন্তু কখনোই জীবটি অন্য প্রজাতির আরেকটি জীবে পরিণত হয় না। এটি ‘Genetics’ এর একটি শক্তিশালী বৈজ্ঞানিক সত্য। তাই বিবর্তনবাদ আজ তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন। নোবেল বিজয়ী কয়েকশ বিজ্ঞানী আছেন যারা বিবর্তনবাদকে সমর্থন করেন নি। স্যার ওয়াটসন ও ক্রীক তাঁদের মধ্যে অন্যতম।
যুক্তি নং ১০ : আমরা যে কাগজে লিখি তার উৎস কি? এর উৎস গাছ। যদি কেউ বলে, অনেক বছর পূর্বে প্রাকৃতিক পরিবর্তনের কারণে গাছ থেকে কাগজের উৎপত্তি হয় এবং সেই কাগজে তৈরী হয় খাতা তা কি আপনি বিশ্বাস করবেন? কখনোই না, কারণ একটি ছোট শিশু ও বুঝতে পারে কাগজ কারখানাতে কারিগরের পরিশ্রমে তৈরী হয়। তাই আজকের এ জীবজগৎ হঠ্যাৎ করে সৃষ্টি তা মানা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক
★ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে বিবর্তনবাদঃ
বর্তমান পৃথিবীতে চারটি ধর্ম খুবই প্রসিদ্ব।তা হল-১.ইসলাম ২.খ্রীষ্টান ৩.ইহুদি ৪.হিন্দু
আর চারটি ধর্মই এ ব্যাপারে একমত যে,আল্লাহ তায়ালা আদম ও হাওয়া (আঃ) এর মাধ্যমে এ পৃথিবীতে মানবজাতীর যাত্রা শুরু করেছেন।নিম্ণে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হল-
★ইসলাম ও বিবর্তনবাদঃ
ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের মধ্যে একটি হল-আল্লাহ তায়ালা প্রথমে পৃথিবীর আদি মানুষ হযরত আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করলেন।অতপর তার বাম পাজরের হাঁড় থেকে তার স্ত্রী হাওয়া (আঃ) কে সৃষ্টি করলেন।দুজনকে সৃষ্টি করে আল্লাহ তায়ালা বেহেশতে রাখলেন। আর বেহেশতে সয়তানের প্ররোচনায় গন্দম ফল হওয়ার কারনে তাদেরকে এ দুনিয়ায় নামিয়ে দিলেন।দুনিয়াতে আসার পর তাদের দুজন থেকে বর্তমান পৃথীবীর এ মানবধারার যাত্রা শুরু হয়।যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন
, { يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُواْ رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالاً كَثِيراً وَنِسَاء وَاتَّقُواْ اللّهَ الَّذِي تَسَاءلُونَ بِهِ وَالأَرْحَامَ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبً{}النساء1.
অর্থাৎ হে মানবমণ্ডলী,তোমরা তোমাদের ঐ প্রভুকে ভয় করে চল,যিনি তোমিদেরকে একটি মাত্র আত্না (আদম আঃ)থেকে সৃষ্টি করলেন।প্রথমে তার স্ত্রীকে (হাওয়া আঃ)সৃষ্টি করলেন।অতপর তাদের দুজন থেকে অনেক পুরুষ ও অনেক মহিলা সৃষ্টি করলেন।কোরআনের এ আয়াত দ্বারা বুঝা যায় এ পৃথিবীর মানবধারা প্রবাহিত হয়েছে আদম ও হাওয়ার দ্বারা।
★ইহুদি ,খ্রিষ্টান ও বিবর্তনবাদঃ
ইহুদি ও খ্রীষ্টানদের অভিমতও হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা আদম ও হাওয়ার মাধ্যমেই মানব জাতীর যাত্রা শুরু করেছেন। যেমন বলা হয়েছে
- The LORD God took the man and put him in the Garden of Eden to work it and take care of it. And the LORD God commanded the man, "You are free to eat from any tree in the garden; but you must not eat from the tree of the knowledge of good and evil, for when you eat of it you will surely die." (NIV, Genesis 2:15-17)
অর্থাৎ প্রভু একজন মানুষ সৃষ্টি করে তাকে ইডেন বাগানে রাখলেন,যাতে সে উহাতে কাজ করে এবং উহার যত্ন নেয় এবং প্রভু ঐ মানুষটিকে নির্দেশ দিলেন যে,তুমি বাগানের যেকোন গাছের ফল খেতে পার শুধুমাত্র মন্দ ও পাপের জ্ঞানের গাছ ছাড়া।যখন তুমি এই গাছের ফল খাবে তাহলে তুমি মারা যাবে।
অন্য আরেক জায়গায় বলা হয়েছে-
But for Adam[f] no suitable helper was found.21 So the Lord God caused the man to fall into a deep sleep; and while he was sleeping, he took one of the man’s ribs[g] and then closed up the place with flesh. 22 Then theLord God made a woman from the rib[h] he had taken out of the man, and he brought her to the man. (Genesis 1:24-28: )
অর্থাৎ-আদমের উপযুক্ত কোন সাহায্যকারী ছিলনা।তাই প্রভু আদমকে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করলেন।যখন আদম ঘুমাইতেছিল তখন আল্লাহ তায়ালা তার পাঁজরের একটি হাঁড় নিলেন এবং সৃষ্ট খালি জায়গাটিকে গোস্ত দিয়ে পূর্ণ করে দিলেন।তখন পাঁজরের হাড় থেকে একজন নারী (হাওয়া আঃ কে) তৈরি করলেন।আর সে নারীকে আদমের নিকট নিয়ে আসা হল। এভাবে আদম ও হাওয়াকে বেহেশতে রাখা হল।তারা যখন নিষিদ্ব ফল ভক্ষন করলেন তখন তাদেরকে বেহেশত থেকে বের করা হল।
যেমন বাইবেলে এক জায়গায় এসেছে-
God told Adam and Eve they must leave the Garden of Eden. They could not live there anymore. Adam and Eve left the Garden of Eden.(Genesis 3:16–24)
অর্থাৎ-আল্লাহ তায়ালা আদম ও হাওয়াকে বললেন,তারা যেন বেহেশতো ত্যাগ করে।তারা যেন এখানে আর না থাকে।আদম ও হাওয়া তখন বেহেশতো ত্যাগ করে পৃথিবীতে প্রেরীত হয়
★হিন্দু ধর্ম ও বিবর্ততনবাদঃ
হিন্দু ধর্মেরও মূল বিশ্বাস হল-সৃষ্টিকর্তা মানব সৃষ্টি করেই এ পৃথিবীর বংশদ্বারা চালু করেছেন।
হিন্দুদের ধর্মীয়গ্রন্হে এসেছে-
In the eastern side of Pradan city where there is a a big God-given forest, which is 16 square yojanas in size. The man named Adama was staying there under a Papa-Vriksha or a sinful tree and was eager to see his wife Havyavati. The Kali purusha quickly came there assuming the form of a serpent. He cheated them and they disobeyed Lord Vishnu. The husband ate the forbidden fruit of the sinful tree. They lived by eating air with the leaves called udumbara. (From the Pratisarga Parva, Chapters Four to Seven/ Bhavishya Purana
অর্থাৎ-প্রধান শহরের পূর্ব সাইডে ছিল আল্লাহ প্রদত্ত এক বিরাট বন।যা ছিল আকারে ১৬ স্কোয়ার যৌজন।সেখানে আদম স্বর্গীয় বা পাপপুর্ণ এক গাছের অধিনে বসবাস করত।তার স্ত্রী হাওয়ার প্রতি তার ছিল প্রবল আকর্ষণ।সয়তান সেখানে সর্পের আঁকারে ছদ্ববেশে আসল।সে তাদেরকে প্রতারিত করল এবং সৃষ্টিকর্তার অবাধ্য হল।স্বামী পাপপূর্ণ গাছের নিষিদ্ব ফল ভক্ষন করল। এভাবে নিষিদ্ব ফল ভক্ষনের পরে আল্লাহ আদম ও হাওয়াকে পৃথিবীর ভুমিতে পাঠিয়ে দিল।তারপর পর্যায়ক্রমে তাদের থেকে বংশবৃদ্বি হতে শুরু হল।
উপরের আলোচনা আমরা বলতে পারি যে,বিবর্তণবাদ একটি অপ্রমাণিত Theory . তাহলে যে, প্রশ্নটি সবার মনে জাগে যেটি হল এ অপ্রমানিত তত্ত্বটি এত ব্যাপকভাবে কেন প্রচারিত হল? এর উত্তরটি আসলে পাওয়া যায় ইতিহাসের পাতায়। গ্যালিলিও যখন বাইবেলের বিপক্ষে কথা বললেন তখণ তাঁকে হত্যা করা হল। আর এটি তখণকার সময়ে প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানীদের মনে দাগ কেটেছিল। সে সময় থেকে ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের বিরোধ শুরু হল। যখন বিবর্তনবাদ প্রকাশিত হল তখণ অধিকাংশ বিজ্ঞানীরা এটি সমর্থন করেছিল কারণ এটি ধর্মের বিরুদ্ধে যায়। আজও শুধু ধর্মের বিরুদ্ধে যায় বলেই এটি এত ব্যাপকভাবে প্রচলিত।
২য় পর্ব দেখতে এখানে ক্লিক করু- http://islameralo21.blogspot.in/?m=1
রেফারেন্সঃ
অর্থ- ধর্ম ছাড়া বিজ্ঞান পঙ্গু আর বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম অন্ধ। বর্তমান একবিংশ শতাব্দীতে সবচেয়ে আলোচিত বা সমালোচিত Theory গুলোর মধ্য থেকে একটি হল-বিবর্তনবাদ।এ মতবাদটি প্রচারের শুরু থেকে যথেষ্ট ত্রুটিপূর্ণ।আজকে আপনাদের সামনে যুক্তির কষ্টিপাথর ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে বিবর্তনবাদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করব।একটু সময় নিয়ে ধৈর্যের সাথে সম্পূর্ণ প্রবন্ধটি পড়ার চেষ্টা করুন তাহলে বিবর্তণবাদ সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা অর্জিত হবে।
★বিবর্তনবাদের সংজ্ঞাঃ
বিবর্তনবাদ হল-এমন একটি Theory যেখানে মনে করা হয় -সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই জীবন্ত বস্তু অস্তিত্বে এসেছে দৈবাৎ কাকতালীয়ভাবে এবং পরবর্তিতে উন্নত হয়েছে আরও কিছু কাকতালীয় ঘটনার প্রভাবে। প্রায় ৩৮ বিলিয়ন বছর আগে, যখন পৃথিবীতে কোন জীবন্ত বস্তুর অস্তিত্ব ছিল না, তখন প্রথম সরল এককোষী জীবের উদ্ভব হয়। সময়ের পরিক্রমায় আরও জটিল এককোষী এবং বহুকোষী জীব পৃথিবীতে আসে। প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সরল কোষ ধীরে ধীরে জটিল হয়ে এবং সরল জীব টিকে থাকার জন্য প্রাকৃতিক নিয়মেই পরিবর্তিত হয়ে জটিল অবস্থার রূপ নেয়।’ সংক্ষেপে বলতে গেলে, ”Survival of the fittest” পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়িয়ে নেওয়ার জন্য জীব সরল থেকে জটিল হয়। এই তত্ব মতে মানুষের উৎপত্তি হয়েছে বানর জাতীয় মানুষ (Ape) থেকে, পর্যায় ক্রমে মিলিয়ন বছরের মাধ্যমে।
★বিবর্তনবাদের প্রবক্তাঃ
বিবর্তন তত্ত্ব সর্ব প্রথম ফ্রেন্স জীববিজ্ঞানী ল্যামার্ক তার Zoological Philosophy (1809) নামক গ্রন্থে তুলে ধরেন। লামার্ক ভেবেছিলেন যে, প্রতিটি জীবের মধ্যেই একটি জীবনী শক্তি কাজ করে যেটি তাদেরকে জটিল গঠনের দিকে বিবর্তনের জন্য চালিত করে। তিনি এটাও ভেবেছিলেন যে, জীবেরা তাদের জীবনকালে অর্জিত গুণাবলি তাদের বংশধরে প্রবাহিত করতে পারে। বিংশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে DNA এর গঠন আবিষ্কারের ফলে লামার্কের তত্ত্বের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার দ্বারা বাতিল হয়ে গেছে এবং তা একটি ত্রুটিপুর্ণ ধারণা হিসেবে ইতিহাসে রয়ে গেছে। এর পরে আসেন প্রাকৃতিক বিজ্ঞানী চার্লস রবার্ট ডারউইন। তার দেয়া তত্ত্বটি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় এবং এই তত্ত্বটি Darwinism বা ডারউইনের বিবর্তনবাদ নামে পরিচিত।
★ডারউইনিজমের জম্মঃ
ডারউইন ১৮৩১ সালে পাঁচ বছরের জন্য সমুদ্র ভ্রমণে বের হন। এই ভ্রমণে তিনি বিভিন্ন প্রজাতির জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে প্রচন্ড প্রাভাবিত হন, বিশেষ করে গালাপাগোস দ্বীপের Finch পাখির ঠোঁট দেখে। এই পাখি গুলোর বিভিন্ন রকমের ঠোঁট দেখে তিনি মনে করেন যে পরিবেশের সাথে অভিযোজনের ফলাফল।
তার এই ভ্রমণ শেষে তিনি লন্ডনের একটি পশু মার্কেট পরিদর্শন করেন। তিনি এখানে দেখতে পান যে Breeders রা সংকরয়নের মাধ্যমে নতুন চরিত্রের গরু উদ্ভাবন করছে। এই সব অভিজ্ঞতা লাভের পর তিনি ১৮৫৯ সালে তার একটি বই প্রকাশ করেন The Origin of Species নামে। এই বইয়ে তিনি তার মতবাদকে তুলে ধরেন। তিনি এখানে বলেন, সকল প্রজাতি একটি কমন পুর্বপুরুষ থেকে এসেছে (অবশ্য এই কমন পূর্বপুরুষ টি কোথা থেকে এসেছে তার ব্যাখ্যা তিনি দেননি)।
★প্রানের উৎপত্তিঃ
ডারউইন তার বইয়ে কোথাও প্রাণের উৎপত্তি নিয়ে কথা বলেননি। তখনকার আমলের সরল মাইক্রোস্কোপ দিয়ে জীব কোষের গঠন সম্পর্কে খুব কমই জানা গিয়েছিল। তখন জীব কোষের গঠনকে খুবই সরল মনে করা হত। তাই তার মতবাদ, জড় বস্তু থেকে জীবের উৎপত্তি তখন খুবই জনপ্রিয়তা পায়। তখন মনে করা হত গম থেকে ইদুরের উৎপত্তি। তারা এটা প্রমাণ করার জন্য গবেষনাগারে একটুকরা কম্বলের উপর কয়েক মুট গম ছড়িয়ে দেয়া হল এবং প্রত্যাশা করা হল যে, এখান থেকে রহস্যজনক ভাবে ইদুরের সৃষ্টি হবে। গম পচা শুরু হলে সেখানে কত গুলো কীট দেখা যায়। এই কিট গুলো আলাদা করে নয়ে বলা হয় যে গমের মত জর পদার্থ থেকে প্রায় একই আকৃতির কীট সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কিছু দিন পর আণুবীক্ষণিক গবেষনা থেকে জানা যায় যে এই কীট গুলো এমনি এমনি সৃষ্টি হয়নি বরং গমের গায়ে পুর্ব থেকে এই লার্ভা লেগে ছিল। ডারউইনের বই বের হওয়ার পাঁচ বছর পর বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর বৈজ্ঞানিক যুক্তি প্রমাণের ভিত্তিতে ডারউইনের বিবর্তনবাদের অসারতা প্রমান করেন। তিনি বলেন, কোন বস্তুই নিজে নিজে সংঘটিত হতে পারে না।
★মিলারের experiment:
বিজ্ঞানী মিলার (১৯৫৩ সালে) এই পরীক্ষায় গ্যাস reaction এর মাধ্যমে কিছু organic molecule সংগ্রহ করেন যেগুলো প্রাচীন জলবায়ুতে অবস্থান করত বলে মনে করা হয়। সে সময় এই পরীক্ষাকে বিবর্তনবাদের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ বলে মনে করা হত। পরে এটাও ভুল প্রমাণিত হয়। কারণ গবেষনায় দেখা গেছে মিলার তার পরীক্ষায় যে গ্যাস use করেছেন তা তখনকার জলবায়ুতে অবস্থানকারী গ্যাস থেকে যথেষ্ট ভিন্ন।
★যুক্তির কষ্টিপাথরে বিবর্তনবাদঃ
বর্তমান সময়ে বিজ্ঞান এতটাই অগ্রসর যা তখনকার সময়ে ছিল না। তাই জেনেটিকস্ মাইক্রোবায়োলজি, এমব্রায়োলজি এ শাখাগুলো বিকাশের সাথে সাথে নতুন নতুন তথ্য উম্মেচিত হয় এবং বিবর্তনবাদ একটি পঙ্গু তত্ত্বের রূপ নেয়। এখানে কতগুলো যুক্তি দেওয়া হল যা বিবর্তনবাদকে একটি ভিত্তিহীন তত্ত্বে রূপান্তরিত করে।
যুক্তি নং ১ : স্লাইডেন এবং সোয়ান যারা কোষ তত্ত্বের প্রবর্তক তাঁরা বলেছেন ”Every cell comes from a pre-existing cell” প্রত্যেকটি কোষ শূন্য থেকে আসে না। তার অবশ্যই একটি মাতৃকোষ থাকে। ভারউইনের বিবর্তবাদ এটির ব্যাখ্যা দিতে পারে না যা কিভাবে জীবনের উৎপত্তি হল। আর সে জন্য বিবর্তনবাদ একটি ভ্রান্ত তত্ত্বে পরিণত হয়েছে।
যুক্তি নং ২ : DNA হচ্ছে জীবনের রাসায়কি ভিত্তি। এ DNA এর উপাদান ৫টি কার্বন, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও ফসফরাস। DNA গুলো অ্যামিনো এসিড তৈরী করে আর এই অ্যামিনো এসিডগুলো প্রোটিন তৈরী করে। আজকের বিজ্ঞান আমাদের বলে একটি DNA অনু যদি হঠাৎ করে তৈরী হত ( বিবর্তনবাদ অনুযায়ী) তবে এর সম্ভাবনা 1/10-268 যা শূন্যের কাছাকাছি। এমনকি বিশ্ব জগতের সব অনুপরমানু একত্রিত করেও একটি DNA তৈরী করা সম্ভব না। বর্তমান এত উচ্চমানের গবেষনাগারেও বিজ্ঞানীরা শূন্য থেকে কোষ তৈরী করতে সক্ষম না। সক্ষম না।
যুক্তি নং ৩ : Thermodynamics এর 2nd Law অনুযায়ী, প্রত্যেকটি সিস্টেম সুশৃঙ্খল অবস্থা থেকে বিশৃঙ্কল অবস্থার দিকে যায় যদি বাহিরের কোন শক্তি এটিকে নিয়ন্ত্রন না করে। ডারউইনের বিবর্তবাদ অনুযায়ী প্রাকৃতিক নিয়মেই সুশৃঙ্খল ভাবে সরল জীবগুলো জটিল অবস্থার রূপ নেয়। Thermodynamics এর সূত্রানুযায়ী, স্রষ্টার সুশৃঙ্খল পরিকল্পনা ছাড়া প্রাকৃতিক নিয়মে কখনোই সরল জীবগুলো জটিল অবস্থা লাভ করতে পারে না। তাই Tneromodynamics যা প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক সত্য তা বিবর্তনবাদকে অস্বীকার করে।
যুক্তি নং ৪: পৃথিবীর এ বিচিত্র প্রাণীর সমারোহ দেখে আমরা কখনোই ভাবতে পারি না মানুষের উৎপত্তি বানর থেকে। কেননা প্রত্যেকটি প্রাণীর ক্রোমোসোম সংখ্যা নির্দিষ্ট। এর কম বা, বেশি হলে প্রাণীটি তার অস্তিত্ব হারায়। বানরের ক্রোমোসোম থেকে মানুষে উৎপত্তি হওয়াটা বিজ্ঞানের কাছে হাস্যকর।
যুক্তি নং ৫: Muation বিবর্তনবাদের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। বিবর্তনবাদ অনুযায়ী সরীসৃপ হতে বিবর্তিত হলে এসেছে পক্ষীকূল। আজকের বিজ্ঞান প্রমাণ কর যে, Muation অর্থাৎ জীনের পরিবর্তনের মাধ্যমে কোনো জীবের বৈশিষ্ঠ্যের পরিবর্তন করা যায় কিন্তু কখনোই বাঘ থেকে হাতী তৈরী করা সম্ভব না। তাই বিবর্তনবাদ অনুযায়ী, সরীসৃপ থেকে পাখির উদ্ভবের ঘটনাটি অবৈজ্ঞানিক।
যুক্তি নং ৬: নৃতত্ত্ববিদরা মানুষের উৎপত্তির ধারাকে চারটি ভাগে ভাগ করেন। এগুলো হলঃ অস্ট্রালোপিথেকাস, হোমো ইরেকটাস হোমোএভিলাস এবং হোমোসেপিয়েনস। বিবর্তনবাদের সাথে এই স্তরগুলোর কোন মিল নেই যা এর অগ্রহণযোগ্যতার একটি কারণ।
যুক্তি নং ৭: সম্প্রতি নাসা থেকে দুটি মহাকাশ যান পাঠানো হয় মঙ্গল গ্রহে। সেখানে পানির উপস্থিতি দেখা যায়। কিন্তু সেখানে কোন জীবনের উৎপত্তি হয় নি। বিবর্তনবাদ অনুযায়ী, যেহেতু সেখানে জীবনের উৎপত্তি হওয়ার পরিবেশ ছিল সেখানে প্রাকৃতিক নিয়মে জীবনের বিকাশ ঘটার কথা। এর কারণ হল, বিবর্তনবাদ বলতে আসলে কিছু নেই। প্রত্যেকটি জিনিসই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়।
যুক্তি নং ৮: বিবর্তনবাদকে যারা সমর্থন করেন তারা ফসিল ( Fossil) গুলো থেকে যুক্তি দেখান। মানুষ ও Primate গোত্রের প্রাণীদের Skull গুলো নিয়ে সাদৃশ্য খুঁজে বের করে তারা মানুষের উৎপত্তি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। তাই আজ তারা সবচেয়ে বড় প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন কেননা জিরাফ এবং জেব্রার মত প্রাণীদের ক্ষেত্রে এ ফসিলগুলো উপর্যুক্ত সত্যতা প্রমাণ করে না। অন্য কোন প্রাণীদের ক্ষেত্রে সাদৃশ্য পাওয়া যায় নি।
যুক্তি নং ৯: বিবর্তবাদ অনুযায়ী প্রতিকূল পরিবেশে টিকে যাকার জন্য প্রাণীদের দৈহিক কাঠামোর পরিবর্তন ঘটে এবং জীবটি তার নিজস্বতা হারিয়ে অন্য একটি প্রজাতিতে পরিণত হয়। আজকের বিজ্ঞান বলে পরিবেশের সাথে সাথে জীবরে কিছু জীনগত পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে জীবটির কিছু বৈশিষ্ট্যর পরিবর্তন ঘটে কিন্তু কখনোই জীবটি অন্য প্রজাতির আরেকটি জীবে পরিণত হয় না। এটি ‘Genetics’ এর একটি শক্তিশালী বৈজ্ঞানিক সত্য। তাই বিবর্তনবাদ আজ তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন। নোবেল বিজয়ী কয়েকশ বিজ্ঞানী আছেন যারা বিবর্তনবাদকে সমর্থন করেন নি। স্যার ওয়াটসন ও ক্রীক তাঁদের মধ্যে অন্যতম।
যুক্তি নং ১০ : আমরা যে কাগজে লিখি তার উৎস কি? এর উৎস গাছ। যদি কেউ বলে, অনেক বছর পূর্বে প্রাকৃতিক পরিবর্তনের কারণে গাছ থেকে কাগজের উৎপত্তি হয় এবং সেই কাগজে তৈরী হয় খাতা তা কি আপনি বিশ্বাস করবেন? কখনোই না, কারণ একটি ছোট শিশু ও বুঝতে পারে কাগজ কারখানাতে কারিগরের পরিশ্রমে তৈরী হয়। তাই আজকের এ জীবজগৎ হঠ্যাৎ করে সৃষ্টি তা মানা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক
★ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে বিবর্তনবাদঃ
বর্তমান পৃথিবীতে চারটি ধর্ম খুবই প্রসিদ্ব।তা হল-১.ইসলাম ২.খ্রীষ্টান ৩.ইহুদি ৪.হিন্দু
আর চারটি ধর্মই এ ব্যাপারে একমত যে,আল্লাহ তায়ালা আদম ও হাওয়া (আঃ) এর মাধ্যমে এ পৃথিবীতে মানবজাতীর যাত্রা শুরু করেছেন।নিম্ণে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হল-
★ইসলাম ও বিবর্তনবাদঃ
ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের মধ্যে একটি হল-আল্লাহ তায়ালা প্রথমে পৃথিবীর আদি মানুষ হযরত আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করলেন।অতপর তার বাম পাজরের হাঁড় থেকে তার স্ত্রী হাওয়া (আঃ) কে সৃষ্টি করলেন।দুজনকে সৃষ্টি করে আল্লাহ তায়ালা বেহেশতে রাখলেন। আর বেহেশতে সয়তানের প্ররোচনায় গন্দম ফল হওয়ার কারনে তাদেরকে এ দুনিয়ায় নামিয়ে দিলেন।দুনিয়াতে আসার পর তাদের দুজন থেকে বর্তমান পৃথীবীর এ মানবধারার যাত্রা শুরু হয়।যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন
, { يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُواْ رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالاً كَثِيراً وَنِسَاء وَاتَّقُواْ اللّهَ الَّذِي تَسَاءلُونَ بِهِ وَالأَرْحَامَ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبً{}النساء1.
অর্থাৎ হে মানবমণ্ডলী,তোমরা তোমাদের ঐ প্রভুকে ভয় করে চল,যিনি তোমিদেরকে একটি মাত্র আত্না (আদম আঃ)থেকে সৃষ্টি করলেন।প্রথমে তার স্ত্রীকে (হাওয়া আঃ)সৃষ্টি করলেন।অতপর তাদের দুজন থেকে অনেক পুরুষ ও অনেক মহিলা সৃষ্টি করলেন।কোরআনের এ আয়াত দ্বারা বুঝা যায় এ পৃথিবীর মানবধারা প্রবাহিত হয়েছে আদম ও হাওয়ার দ্বারা।
★ইহুদি ,খ্রিষ্টান ও বিবর্তনবাদঃ
ইহুদি ও খ্রীষ্টানদের অভিমতও হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা আদম ও হাওয়ার মাধ্যমেই মানব জাতীর যাত্রা শুরু করেছেন। যেমন বলা হয়েছে
- The LORD God took the man and put him in the Garden of Eden to work it and take care of it. And the LORD God commanded the man, "You are free to eat from any tree in the garden; but you must not eat from the tree of the knowledge of good and evil, for when you eat of it you will surely die." (NIV, Genesis 2:15-17)
অর্থাৎ প্রভু একজন মানুষ সৃষ্টি করে তাকে ইডেন বাগানে রাখলেন,যাতে সে উহাতে কাজ করে এবং উহার যত্ন নেয় এবং প্রভু ঐ মানুষটিকে নির্দেশ দিলেন যে,তুমি বাগানের যেকোন গাছের ফল খেতে পার শুধুমাত্র মন্দ ও পাপের জ্ঞানের গাছ ছাড়া।যখন তুমি এই গাছের ফল খাবে তাহলে তুমি মারা যাবে।
অন্য আরেক জায়গায় বলা হয়েছে-
But for Adam[f] no suitable helper was found.21 So the Lord God caused the man to fall into a deep sleep; and while he was sleeping, he took one of the man’s ribs[g] and then closed up the place with flesh. 22 Then theLord God made a woman from the rib[h] he had taken out of the man, and he brought her to the man. (Genesis 1:24-28: )
অর্থাৎ-আদমের উপযুক্ত কোন সাহায্যকারী ছিলনা।তাই প্রভু আদমকে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করলেন।যখন আদম ঘুমাইতেছিল তখন আল্লাহ তায়ালা তার পাঁজরের একটি হাঁড় নিলেন এবং সৃষ্ট খালি জায়গাটিকে গোস্ত দিয়ে পূর্ণ করে দিলেন।তখন পাঁজরের হাড় থেকে একজন নারী (হাওয়া আঃ কে) তৈরি করলেন।আর সে নারীকে আদমের নিকট নিয়ে আসা হল। এভাবে আদম ও হাওয়াকে বেহেশতে রাখা হল।তারা যখন নিষিদ্ব ফল ভক্ষন করলেন তখন তাদেরকে বেহেশত থেকে বের করা হল।
যেমন বাইবেলে এক জায়গায় এসেছে-
God told Adam and Eve they must leave the Garden of Eden. They could not live there anymore. Adam and Eve left the Garden of Eden.(Genesis 3:16–24)
অর্থাৎ-আল্লাহ তায়ালা আদম ও হাওয়াকে বললেন,তারা যেন বেহেশতো ত্যাগ করে।তারা যেন এখানে আর না থাকে।আদম ও হাওয়া তখন বেহেশতো ত্যাগ করে পৃথিবীতে প্রেরীত হয়
★হিন্দু ধর্ম ও বিবর্ততনবাদঃ
হিন্দু ধর্মেরও মূল বিশ্বাস হল-সৃষ্টিকর্তা মানব সৃষ্টি করেই এ পৃথিবীর বংশদ্বারা চালু করেছেন।
হিন্দুদের ধর্মীয়গ্রন্হে এসেছে-
In the eastern side of Pradan city where there is a a big God-given forest, which is 16 square yojanas in size. The man named Adama was staying there under a Papa-Vriksha or a sinful tree and was eager to see his wife Havyavati. The Kali purusha quickly came there assuming the form of a serpent. He cheated them and they disobeyed Lord Vishnu. The husband ate the forbidden fruit of the sinful tree. They lived by eating air with the leaves called udumbara. (From the Pratisarga Parva, Chapters Four to Seven/ Bhavishya Purana
অর্থাৎ-প্রধান শহরের পূর্ব সাইডে ছিল আল্লাহ প্রদত্ত এক বিরাট বন।যা ছিল আকারে ১৬ স্কোয়ার যৌজন।সেখানে আদম স্বর্গীয় বা পাপপুর্ণ এক গাছের অধিনে বসবাস করত।তার স্ত্রী হাওয়ার প্রতি তার ছিল প্রবল আকর্ষণ।সয়তান সেখানে সর্পের আঁকারে ছদ্ববেশে আসল।সে তাদেরকে প্রতারিত করল এবং সৃষ্টিকর্তার অবাধ্য হল।স্বামী পাপপূর্ণ গাছের নিষিদ্ব ফল ভক্ষন করল। এভাবে নিষিদ্ব ফল ভক্ষনের পরে আল্লাহ আদম ও হাওয়াকে পৃথিবীর ভুমিতে পাঠিয়ে দিল।তারপর পর্যায়ক্রমে তাদের থেকে বংশবৃদ্বি হতে শুরু হল।
উপরের আলোচনা আমরা বলতে পারি যে,বিবর্তণবাদ একটি অপ্রমাণিত Theory . তাহলে যে, প্রশ্নটি সবার মনে জাগে যেটি হল এ অপ্রমানিত তত্ত্বটি এত ব্যাপকভাবে কেন প্রচারিত হল? এর উত্তরটি আসলে পাওয়া যায় ইতিহাসের পাতায়। গ্যালিলিও যখন বাইবেলের বিপক্ষে কথা বললেন তখণ তাঁকে হত্যা করা হল। আর এটি তখণকার সময়ে প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানীদের মনে দাগ কেটেছিল। সে সময় থেকে ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের বিরোধ শুরু হল। যখন বিবর্তনবাদ প্রকাশিত হল তখণ অধিকাংশ বিজ্ঞানীরা এটি সমর্থন করেছিল কারণ এটি ধর্মের বিরুদ্ধে যায়। আজও শুধু ধর্মের বিরুদ্ধে যায় বলেই এটি এত ব্যাপকভাবে প্রচলিত।
২য় পর্ব দেখতে এখানে ক্লিক করু- http://islameralo21.blogspot.in/?m=1
রেফারেন্সঃ
1.http://www.creationdefense.org/06.htm
2.https://www.google.com/amp/s/defendingcontending.com/2009/03/17
3.https://www.youtube.com/watch?v=vKR9vS4df-I
4.https://answersingenesis.org/genetics/genetics-no-friend-of-evolution
5.https://www.evolutionnews.org/2007/03/darwin_mendel_watson_and_crick
6.https://www.nasa.gov/press-release/nasa-confirms-evidence-that-liquid-water-flows-on-today-s-mars
7. https://en.m.wikipedia.org/wiki/Cell_theory
No comments:
Post a Comment