Saturday, April 29, 2017

যুক্তির কষ্টিপাথরে বিবর্তণবাদের theory (২য় পর্ব)


গতপর্বে  আমি আপনাদেরকে বিজ্ঞান ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে বিবর্তণবাদ সম্পর্কে আলোচনা করেছি।আজকের পর্বে আমি বিবর্তণবাদিদেরকে কিছু কমন প্রশ্ন করব।নিচে প্রশ্নগুলো আলোকপাত করা হল-
★ পা-এর উপর ভিত্তি করে প্রকৃতিতে যেমন পা-বিহীন প্রাণী (সাপ, জোঁক, কেঁচো) আছে তেমনি আবার দ্বিপদী প্রাণী (মানুষ, পাখি), চতুষ্পদী প্রাণী (বাঘ, সিংহ, হাতি,ঘোড়া, গরু, ছাগল), ষষ্ঠপদী প্রাণী (কীট-পতঙ্গ),অষ্টপদী প্রাণী (মাকড়সা), এবং বহুপদী প্রাণীও (বিছা পোকা) আছে। বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে: – বর্তমানেই যেখানে অনেক প্রাণীর কোনো পা নেই, সেখানে ঠিক কী কারণে অন্যান্য প্রাণীদের দেহে পা গজানোর দরকার পড়ল? পা-বিহীন কিছু প্রাণীকে আলাদা করে বিশেষ কোনো পরিবেশে রেখে দেওয়া হলে তাদের দেহে 'এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচন'-এর মাধ্যমে পা গজানো শুরু করবে কি-না? কিংবা পা-ওয়ালা কিছু প্রাণীকে বিশেষ কোনো পরিবেশে রেখে দিলে তাদের পা ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হওয়া শুরু করবে কি-না? বিবর্তনবাদীরা কোথাও এই ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা-পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছেন কি? নিদেনপক্ষে পরীক্ষা শুরু করা না হয়ে থাকলে কেন শুরু করা হয়নি? – ষষ্ঠপদী প্রাণী থেকে চতুষ্পদী প্রাণী কিংবা চতুষ্পদী প্রাণী থেকে ষষ্ঠপদী প্রাণীর প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে বিবর্তিত হওয়ার পক্ষে মধ্যবর্তী ধাপগুলো-সহ কিছু প্রমাণ দেওয়া যাবে কি?

 ★বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী মানুষের আদি পূর্ব- পুরুষ প্রাইমেটরা গাছে গাছে ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য লেজ ব্যবহার করতো। গাছ থেকে নিচে নেমে আসার পর লেজের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যাওয়ার কারণে লেজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাদের এই 'যুক্তি' অনুযায়ী মানুষের আদি পূর্ব-পুরুষদের প্রথমে লেজ ছিল না। এক পর্যায়ে বনে-জঙ্গলে যেয়ে গাছে গাছে বিচরণের ফলে ভারসাম্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনে লেজ গজিয়েছে। গাছ থেকে নিচে নেমে আসার পর যেহেতু লেজের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে সেহেতু লেজ লোপ পেয়ে মানুষের মতো লেজ- বিহীন প্রজাতিতে রূপান্তরিত হয়েছে! অর্থাৎ প্রাণীদের প্রয়োজনেই তাদের দেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গজায়, আবার প্রয়োজন ফুরালে সেই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিলুপ্ত হয়ে যায়! তো গাছে গাছে বিচরণ করলেই যদি ভারসাম্য রক্ষার প্রয়োজনে লেজ-বিহীন প্রাণীদের দেহে লেজ গজায়, কিংবা গাছে গাছে বিচরণ না করলেই যদি লেজ-বিশিষ্ট প্রাণীদের লেজ বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে: – তারা কি লেজ-বিহীন কিছু মানুষকে বনের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে গাছে গাছে বিচরণ করার জন্য কোনো পরীক্ষা শুরু করেছেন এটা পর্যবেক্ষণের জন্য যে, তাদের দেহে সত্যি সত্যি লেজ গজানো শুরু করে কি-না? কিংবা কিছু লেজ-বিশিষ্ট প্রাণীকে গাছ-বিহীন জায়গায় রেখে দিয়ে কোথাও কি কোনো পরীক্ষা শুরু করা হয়েছে এটা পর্যবেক্ষণের জন্য যে, তাদের লেজ ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হওয়া শুরু করে কি-না? এই ধরণের কোনো পরীক্ষা যদি শুরুই করা না হয়ে থাকে তাহলে এতদিনেও তা শুরু করা হয়নি কেন? বিজ্ঞানের নিয়ম হচ্ছে পরীক্ষা আগে শুরু করতে হবে, ফলাফল পরের কথা। কাজেই পরীক্ষা শুরু না করে কোনো রকম অজুহাত চলবে না। (পাঠকদের জন্য নোট: বিবর্তনবাদীরা কিন্তু অনেক আগে থেকেই আণুবীক্ষণিক জীব ব্যাকটেরিয়া [ই. কোলাই] নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছেন। ব্যাকটেরিয়া থেকে ভিন্ন কোনো প্রজাতিতে রূপান্তরিত হচ্ছে কি-না, সেটা তারা পর্যবেক্ষণ করছেন। অথচ তারা বড় কোনো প্রাণী নিয়ে এই ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা- পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছেন না! বুদ্ধিমানদের জন্য নাকি ঈশারাই যথেষ্ট। তারপরও এর গোপন রহস্য বলে রাখি। ব্যাকটেরিয়ার মতো অতি ক্ষুদ্র আণুবীক্ষণিক জীব নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার দাবি করে সাধারণ মানুষকে যত সহজে ঘোল খাওয়ানো সম্ভব, বড় কোনো প্রাণীর ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই তা সম্ভব নয়। কেননা বড় প্রাণীকে সকলেই খালি চোখে দেখতে পাবে। অধিকন্তু, বড় প্রাণীদের নিয়ে পরীক্ষা শুরু করলে দেখা যাবে তাদের দেহে কোনো পরিবর্তন আসার আগেই তারা মারা গেছে! কাজেই বড় প্রাণীদের নিয়ে পরীক্ষা করে কোনো রকম চাপাবাজি করতে গেলে সাধারণ লোকজনের কাছেই হাতেনাতে ধরা খেতে হবে! এই কারণেই তারা জেনেবুঝে শুধু আণুবীক্ষণিক জীব ব্যাকটেরিয়া নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা-পর্যবেক্ষণ

★ বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী বিবর্তন একটি চলমান ও অন্ধ প্রক্রিয়া। বিবর্তনের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যও নেই। তো বিবর্তন যদি একটি চলমান প্রক্রিয়া হয় এবং বিবর্তনবাদীরা যদি ভিন্ন কোনো প্রজাতি থেকে বিবর্তিত হয়ে থাকে, তাহলে তারা নিজেরাও একদিন বিবর্তিত হয়ে ভিন্ন কোনো প্রজাতিতে রূপান্তরিত হওয়ার কথা। কোনো বিবর্তনবাদীই এই সত্যকে অস্বীকার করতে পারবেন না। কেউ অস্বীকার করলে যৌক্তিক কারণ দর্শাতে হবে। বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে: – তারা আজ থেকে কোটি কোটি বছর পর বিবর্তিত হয়ে যে ধরণের প্রজাতিতে রূপান্তরিত হতে পারে, তার সম্ভাব্য কিছু ছবি দেখাতে পারবেন কি-না? তাদের দাবি অনুযায়ীই বিবর্তন যেহেতু একটি লক্ষ্যহীন ও অন্ধ প্রক্রিয়া সেহেতু তাদের উত্তর-পুরুষদের যে ছবিগুলো কল্পনা করা হবে, সেগুলোই বাস্তবে রূপ নিতে পারে। কাজেই বিবর্তনীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সম্ভাব্য বা কাল্পনিক ছবি দিতে কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়, যেখানে তারা ইতোমধ্যে তাদের পূর্ব-পুরুষদের অনেক কাল্পনিক ছবি বানিয়েছেন। (পাঠকদের জন্য নোট: বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সমন্বয়ে বিবর্তনবাদীদের বর্তমান যে শারীরিক অবয়ব আছে, তার চেয়ে কম-বেশি কিছু তারা কল্পনাও করতে পারবেন না! আর কল্পনা করতে পারলেও তারা লজ্জায় সেটা দেখাতে পারবেন না! এ থেকে প্রমাণ হবে যে, তারা নিজেরাই আসলে বিবর্তনে বিশ্বাস করে না।)

 ★ধরা যাক, বিবর্তনবাদীদের কেউ এক চোখ কিংবা তিন চোখ কিংবা এক হাত কিংবা পাঁচ হাত কিংবা এক পা কিংবা তিন পা কিংবা শিং- ওয়ালা কিংবা লেজ-ওয়ালা কিংবা সামনে-পেছনে দুই লিঙ্গ-বিশিষ্ট কিংবা লিঙ্গ-বিহীন কিংবা সবকিছুর সমন্বয়ে 'অদ্ভুত' বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন একটি সন্তান প্রসব করলেন। এই ধরণের সন্তান প্রসবের খবর তো মাঝে মাঝেই শোনা যায়। বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে: – বিবর্তনীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সেই শিশু বাচ্চাটি "স্বাভাবিক" নাকি "অস্বাভাবিক" হিসেবে গণ্য হবে? যদি "অস্বাভাবিক" হিসেবে গণ্য হয় তাহলে ঠিক কোন্ যুক্তি বা স্ট্যান্ডার্ড-এর ভিত্তিতে সেটিকে "অস্বাভাবিক" হিসেবে গণ্য করা হবে? বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী স্ট্যান্ডার্ড বা স্বাভাবিক বলে কিছু আছে কি-না বা থাকতে পারে কি-না? – বিবর্তনবাদীদের নিজের কিংবা নবজাত সন্তানের শরীরে এমন কিছু পরিবর্তনের উদাহরণ দিতে হবে যেগুলো বিবর্তনের চিহ্ন বা উপসর্গ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। অর্থাৎ তারা মানব শরীরে কী ধরণের পরিবর্তন দেখলে সেটিকে বিবর্তনের চিহ্ন বা উপসর্গ ধরে নিয়ে ডাক্তারের কাছে না যেয়ে চুপচাপ থাকবেন, আর কী ধরণের পরিবর্তন দেখলে সেটিকে "অস্বাভাবিক" আখ্যা দিয়ে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে ছুটবেন – এই বিষয় দুটি কিছু উদাহরণ-সহ সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।

★বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী শিম্পাজীরা তাদের রক্তের সম্পর্কের নিকটতম আত্মীয়। শিম্পাজীদের সাথে তাদের নাকি তেমন কোনো পার্থক্যই নাই! তা-ই যদি হয় তাহলে বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে: – তারা কি কখনো তাদের নিকটতম আত্মীয়দের কাছে থেকে বিবর্তন সম্পর্কে কিছু জানতে চেয়েছেন? অন্তত চেষ্টা করে দেখেছেন কি? নিদেনপক্ষে চেষ্টাও যদি না করা হয়ে থাকে তাহলে কেন করা হয়নি? কিংবা শিম্পাঞ্জীদের কেউ বিবর্তনবাদীদেরকে বিবর্তন সম্পর্কে কিছু তথ্য-প্রমাণ দিয়ে সাহায্য করেছে কি-না? তাছাড়া বিবর্তনবাদীদের নিকটতম আত্মীয়রা নিজেদের বিবর্তনে বিশ্বাস করে কি-না – এই প্রশ্ন কি তাদেরকে করা হয়েছে? জিজ্ঞেস না করে নিকটতম আত্মীয়দেরকে অনৈতিকভাবে 'মিসিং লিঙ্ক, টিসিং লিঙ্ক' জাতীয় কিছু বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে কেন?

★যেখানে মানুষের সাথে শিম্পাঞ্জীদের খালি চোখে দেখা যায় এমন অনেক মিল আছে, প্রকৃতপক্ষে জৈবিক কোনো পার্থক্য নাই বললেই চলে, সেখানে বিবর্তনবাদীরা ডিএনএ দিয়ে মানুষের সাথে শিম্পাঞ্জীর সাদৃশ্য দেখানোর চেষ্টা করছেন কেন? মানুষ ও শিম্পাঞ্জীর দেহে সহসা দৃশ্যমান এতো অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ থাকতে ডিএনএ নামক অদৃশ্য কিছুর মধ্যে মাথা গোঁজার কারণ কী?

★বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী তাদের পূর্ব- পুরুষদের এক সময় লেজ ছিল। পরবর্তীতে সেই লেজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। প্রমাণ হিসেবে তারা কিছু লেজ-ওয়ালা (?) মানব শিশুর উদাহরণ দিয়ে থাকেন। তাদের এ- ও দাবি যে, মানুষের পেছন দিকে লেজের গোড়ার হাড় আছে! কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে: – যে অঙ্গটি আগে ছিল, এখন সেটি আর নেই। এখানে বিবর্তন কোথায় হলো? কীসের বিবর্তন হলো? প্রাণীদের দেহ থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়াকে কি বিবর্তন বলে?

★বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী তাদের পূর্ব-পুরুষরা এক সময় তৃণভোজী থাকার কারণে তাদের অ্যাপেনডিক্স কার্যকর ও উপকারী ছিল। কিন্তু তৃণভোজী থেকে মাংশাষী হওয়ার পর সেই একই অ্যাপেনডিক্স কার্যকারীতা হারিয়ে নিষ্ক্রিয় ও ক্ষতিকর হয়ে গেছে। তাদের দাবি অনুযায়ী মানবদেহে এরূপ শতাধিক নিষ্ক্রিয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আছে যেগুলো আগে সক্রিয় ছিল। তার মানে যে অঙ্গ- প্রত্যঙ্গগুলো আগে সক্রিয় ও কার্যকর ছিল, সেগুলোই পরবর্তীতে কার্যকারীতা হারিয়ে ফেলে নিষ্ক্রিয় ও ক্ষতিকর হয়ে গেছে। তা-ই যদি হয় তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে: – একটি ভালো বা কার্যকর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কোনো কারণে তার কার্যকারীতা হারিয়ে ফেলে নিষ্ক্রিয় বা ক্ষতিকর হয়ে গেলে সেটিকে কি বিবর্তন বলা হয়? এখানে বিবর্তন ঠিক কোথায় হলো? কী থেকে কী বিবর্তিত হলো?

★বিবর্তনবাদের সমালোচকদের মধ্যে কেউ কেউ কৌতুকচ্ছলে কিংবা ধরা যাক না জেনে বানর থেকে মানুষ বিবর্তিত হওয়ার কথা বলে হাসি-ঠাট্টা করে থাকেন। কেউ কেউ আবার প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন এই বলে যে, বানর থেকে যদি মানুষ বিবর্তিত হয়ে থাকে তাহলে এখনো অনেক বানর থাকা সত্ত্বেও সেগুলো থেকে মানুষ বিবর্তিত হওয়ার কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না কেন? (নোট: আমার লেখার কোথাও এই ধরণের কথাবার্তা বা প্রশ্ন পাওয়া যাবে না।) এই কথা শোনার সাথে সাথে বিবর্তনবাদীরা তেড়ে এসে প্রশ্নকারীকে 'অজ্ঞ-মূর্খ' আখ্যা দিয়ে যা বলেন তার অর্থ হচ্ছে: “হেঃ হেঃ বিবর্তন সম্পর্কে আপনাদের কোনো ধারণাই নাই! বর্তমান যুগের বানর থেকে তো মানুষ বিবর্তিত হয়নি! বরঞ্চ মানুষ ও বানর একটি ‘সাধারণ পূর্ব-পুরুষ’ থেকে বিবর্তিত হয়েছে।” কিন্তু সেই ‘সাধারণ পূর্ব-পুরুষ’ কি মানুষ নাকি বানর নাকি অন্য কিছু ছিল, সেটা কখনোই পরিষ্কার করে বলা হয় না। যাহোক, বর্তমান যুগের বানর থেকে মানুষ বিবর্তিত হোক বা অন্য কিছু থেকে বিবর্তিত হোক – এই বিষয়টাকে এক পাশে রেখে বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে: – বিবর্তন তত্ত্বের কোথাও কি লিখা আছে যে, বর্তমান যুগের বানর থেকে মানুষ বিবর্তিত হতে পারে না? অন্য কথায়, বর্তমান যুগের বানর থেকে মানুষের বিবর্তন কি সম্ভব নয়? যদি সম্ভব না হয়, তাহলে কেন সম্ভব নয় তা সুস্পষ্ট যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে হবে। –
 রিচার্ড ডকিন্স একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “Monkeys and we come from a common ancestor and that common ancestor would probably have been called the monkey.” রিচার্ড ডকিন্সের দাবি অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে মানুষ আসলে বানর থেকেই বিবর্তিত হয়েছে – অর্থাৎ মানুষের পূর্ব- পুরুষ বানরই ছিল। তাহলে বাংলা অন্তর্জালে যারা এতদিন ধরে এই বিষয়টা নিয়ে সমালোচকদেরকে বিভিন্নভাবে হেয় করে আসছে তারা কি অজ্ঞ না ভণ্ড? তারা এই ধরণের কথাবার্তা (বানর থেকে মানুষের বিবর্তন) কিংবা প্রশ্ন (বানর থেকে যদি মানুষ বিবর্তিত হয়ে থাকে তাহলে বর্তমান যুগের বানর থেকে মানুষ বিবর্তিত হচ্ছে না কেন?) শুনে ক্ষেপে যায় কেন? তারা কি নিজেদের পূর্ব-পুরুষকে বানর হিসেবে দেখতে অপমানিত বোধ করেন? তারা কি তাহলে বিবর্তনবাদীরূপী ভণ্ড?

★একটি বনের মধ্যে অনেক বাঘ আর হরিণ একসাথে রেখে দিলে বাস্তবে কী ঘটতে পারে? ১ম সম্ভাবনা: বাঘ আর হরিণ প্রজাতি নিজেদের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে বংশবৃদ্ধি করতে থাকবে। ২য় সম্ভাবনা: বাঘ প্রজাতি ধীরে ধীরে হরিণ প্রজাতিকে খেয়ে ফেলার কারণে এক সময় হরিণ প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটবে, থাকবে শুধু বাঘ প্রজাতি। ৩য় সম্ভাবনা: শক্তিশালী বাঘগুলো দুর্বলদেরকে হত্যা করে খেয়ে কিছুদিন বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে পারে। তবে এভাবে চলতে থাকলে একটা সময় সেই বন থেকে বাঘ প্রজাতিও বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ৪র্থ সম্ভাবনা (খুবই ক্ষীণ): বাঘ প্রজাতির মধ্যে কেউ কেউ লতা-পাতা-ফল-মূল খেয়ে বাঁচার চেষ্টা করতে পারে, যদিও এ'রকম কোনো প্রমাণ আছে কি-না জানা নেই। এভাবে যদি কিছু বাঘ বেঁচেও থাকে তাহলে সেই বাঘগুলো থেকে শুধু বাঘেরই বংশবিস্তার হবে। তবে খ্যাদ্যাভাস পরিবর্তনের কারণে তাদের আচার-আচরণে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে। ক্ষীণ সম্ভাবনা-সহ সবগুলো সম্ভাবনার কথাই বলে দেওয়া হলো। কিন্তু এ ব্যাপারে বিবর্তন তত্ত্ব কী বলে? এখানে থেকে 'এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচন'-এর মাধ্যমে নতুন প্রজাতির উদ্ভব হবে কী করে? অকাট্য প্রমাণ-সহ এই অতি সহজ একটি প্রশ্নের জবাব দেবার মতো এই দুনিয়াই কোনো বিবর্তনবাদী আছে কি?

★ কোনো যুক্তি-প্রমাণ ছাড়াই বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী প্রায় (?) সবগুলো ধর্ম বিশেষ করে আব্রাহামিক ধর্মের সৃষ্টিতত্ত্ব মিথ বা হাস্যকর রকমের গাঁজাখুরি কল্পকাহিনী। তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে: – সারা বিশ্বের মিথ বা কল্পকাহিনীগুলোর মধ্যে তাদের কাছে যেটিকে সবচেয়ে অযৌক্তিক ও হাস্যকর বলে মনে হয়, সেটি উল্লেখপূর্বক, সেটি কেন অযৌক্তিক ও হাস্যকর তার পক্ষে যুক্তি দিতে হবে। (নোট: নির্দিষ্ট একটি মিথ বা কল্পকাহিনীর নাম উল্লেখ করতে হবে, এবং সেটি কেন অযৌক্তিক ও হাস্যকর তার পক্ষে যুক্তি দিতে হবে।) পাঠক নিশ্চয় বুঝতে পারছেন বিবর্তন তত্ত্ব নিয়ে অসংখ্য- অগণিত প্রশ্ন করা সম্ভব। বিবর্তন তত্ত্বের যেকোনো একটি দিক নিয়েই অনেক প্রশ্ন করা যায়। কিন্তু অতো কিছু তো আর লিখার মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব নয়, তার দরকারও নাই। পাতিল ভর্তি ভাতের দু-চারটি টিপলেই বুঝা যায় ভাত রান্না হয়েছে কি-না। এজন্য এখানে কতিপয় মৌলিক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হলো।
প্রথম পর্ব দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন-http://islameralo21.blogspot.com/2017/03/theory.html?m=1

Monday, April 24, 2017

ইসলামের বিরুদ্বে নব্য ষড়যন্ত্র ও আমাদের করণীয়।

ইসলামের নামে যারা জঙ্গিবাদ ও বোমাবাজি ও গুপ্তহত্যা চালায় তাদের সাথে ইসলামের আদৌ কোন সম্পর্ক নেই।তারা মূলত ইসলাম বিদ্বেষী চক্রের ইঙ্গিতেই শান্তির ধর্ম ইসলামকে কলুষিত করার জন্যই সুনির্দিষ্ট প্লান নিয়েই মাঠে নেমেছে।যেমন কিছুদিন আগেও যুগান্তর পত্রিকায় খবর এসেছে সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসের প্রধান খতিব আল-বাগদাদি হল- ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্হার লোক।
যেমন যুগান্তরের রিপোর্ট- www.jugantor.com/old/first-page/2015/11/18/9398 
বাংলা ট্রিউবনের রিপোর্ট- http://m.banglatribune.com/foreign/news/198415/গুঁড়িয়ে-দেওয়া-আইএস-ঘাঁটি-সিআইএ’র-তৈরি-ব্যবহার
 সুতরাং সারা বিশ্বের প্রতিটি শান্তিকামি তোহিদী জনতার উচিৎ এ সমস্ত ইসলাম কলুষিত কারীদের শক্তভাবে প্রতিরোধ করা।এরা সুদুর প্রসারী চক্রান্তের দ্বারা জিহাদ আর সন্ত্রাসবাদকে একাকার করে ফেলেছে অথচ জিহাদ ও সন্ত্রাসবাদের মধ্যে রয়েছে আকাশ আর পাতাল পার্থক্য। জিহাদ ইসলামে একটি ইবাদৎ আর সন্ত্রাস হল ইসলামে হারাম।জিহাদ পরিচালিত হয় সমস্ত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্বে আর আর সন্ত্রাসবাদ পরিচালিত হয় সমস্ত ন্যায়ের বিরুদ্বে। ইসলামী শরীয়তে জিহাদ পরিচালনার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে ।এ শর্তগুলো পাওয়া গেলেই কিতাল সংগঠিত করা যাবে ।আর এ গুলো পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে কিতাল হবে না।নিম্ণে কিতাল সংগঠিত করার শর্তগুলো আলোচনা করা হল-
 ★ইসলামী রাষ্ট্র হওয়া।
★ইসলামী রাষ্ট্রের আমিরের নির্দেশে কিতাল সংগঠিত হওয়া।
★মুজাহিদকে মুসলিম,প্রাপ্ত বয়স্ক,জ্ঞানবান,ও পুরুষ হতে হবে।তবে ইসলামী রাষ্ট্র যদি অমুসলিমদের দ্বারা ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয় তখন নারী পুরুষ সবার উপরে কিতাল ফরজ হয়।
★কিতাল হবে ঐ সমস্ত অমুসলিমদের সাথে যারা মুসলমানদের সাথে স্বেচ্ছায় যুদ্বে লিপ্ত হয়।সুতরাং মুসলিমদের সাথে কিতাল জায়েয নয়।
★অমুসলিমদের মধ্যে যারা মুসলমানদের সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকে তাদের সাথে কিতাল জায়েয নয়।

★ইসলামি রাষ্ট্রে যে সমস্ত অমুসলিম থাকে তারাও যদি কর দিয়ে কোন বিশৃংখলা না করে বসবাস করে তাদের জান মালে আক্রমন করা মুসলিমদের জন্য হারাম।
★যে সমস্ত অমুসলিম সরাসরি জিহাদে লিপ্ত তাদেরকেই শুধু আক্রমন করা যাবে।
 ★চোরাগুপ্তা নয় বরং প্রকাশ্য গোষণার মাধ্যমে বীরত্বের সাথেই সম্মুখ যুদ্ব হওয়া।

 আবার জিহাদের ময়দানেও কিছু শর্ত রয়েছে।যথা-
★ যারা সরাসরি জিহাদে লিপ্ত নয় অর্থাৎ সৈনিক নয়, সাধারণ মানুষ, তাদেরকে হত্যা করা যাবে না।
 ★যুদ্বকালীন অবস্হায় অমুসলিম কোন নারী,শিশু,ধর্মীয় পণ্ডিত,বৃদ্ব ও শ্রমিকদের উপর আক্রমন করা যাবে না।তবে তারা যদি মুসলিম সৈনিকদের সাথে সরাসরি কোন যুদ্বে লিপ্ত হয় তখন তাদেরকে আক্রমন করা যাবে।
★ অমুসলিমদের কোন ধন সম্পদ বা ঘরবাড়ি বা চতুষ্পদ জন্তুকে অপ্রয়োজনে নষ্ট করা যাবে না।

★যুদ্বকালিন যদি কেহ ইমান আনার ঘোষণা দেয় তাহলে তাকে হত্যা করা যাবে না।

★যদি কোন শত্রু বন্দি হয় তার সাথে দুর্ব্যবহার করা যাবে না বরং নম্র আচরণ করতে হবে।

 সুতরাং উপরের শর্তগুলো থেকে বুঝে নিতে পারেন যারা আইএস,বোকো হারাম,আল-শাবাব,জেএমবি নাম দিয়ে ইসলামের নামে নিরীহ মুসলিম ও অমুসলিমদের হত্যা করতেছে তারা কতটুকু ইসলামের গণ্ডির ভিতরে রয়েছে?এরা মূলত বৃহৎ টার্গেট নিয়ে শান্তির ধর্ম ইসলামকে বিশ্বের দরবারে কলুষিত করার চেষ্টায় লিপ্ত।আল্লাহ তায়ালা এ নব্য ফেতনা থেকে মুসলিম জাতিকে হেফাজত করুক!আমিন!

Monday, April 10, 2017

★আল কোরআন ও বিগব্যাং থিওরী:

ইসলাম হল-আল্লাহ তায়ালা কতৃক একমাত্র মনোনীত জীবন ব্যবস্হা।যে জীবনব্যবস্হার প্রতিটি কাজই হল-বিজ্ঞান সম্মত ও আধুনিক।মানুষের জ্ঞান বিজ্ঞানের যতই উন্নতি হচ্ছে ইসলামের বিধানগুলোর সত্যতা ততই দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হচ্ছে।বিজ্ঞানের থিওরির মধ্যে অন্যতম একটি থিওরি হল-বিগ ব্যাং থিওরি।আল্লাহর প্রেরিত রাসুল মুহাম্মদ (সাঃ) আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে পবিত্র কোরআন শরীপে বিগ ব্যাং থিওরির সত্যতার প্রতি বলে গিয়েছেন।নিম্নে বিগ ব্যাং থিওরির সত্যতা সম্পর্কে আল কোরআনের অবস্হান তুলে ধরা হল-

 ★বিগ ব্যাং থিওরি কি? বিশ্বের সৃষ্টি সম্পর্কে জ্যোতির্বিদগণ কর্তৃক প্রদত্ত একটি ব্যাখ্যা হল বিগ ব্যাং থিওরি, যা ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন তথ্য ও পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে এই তত্ত্ব সমর্থিত হয়েছে। “বিগ ব্যাং” অনুসারে মহাবিশ্ব প্রাথমিক অবস্থায় একটি বিশাল নিহারিকা ছিল। তারপর সেখানে একটি মহা বিস্ফরন ঘটে, ফলে ছায়া পথ তৈরি হয়। পরবর্তীতে এগুলো তারা, গ্রহ, সূর্য ও চন্দ্র ইত্তাদিতে রুপান্তরিত হয়। এই তত্ত্ব বলে আজ থেকে প্রায় ১৩.৭ বিলিয়ন বছর পূর্বে এই মহাবিশ্ব একটি অতি ঘন এবং উত্তপ্ত অবস্থা থেকে সৃষ্টি হয়েছিল। বিজ্ঞানী এডুইন হাবল প্রথম বলেন, দূরবর্তী ছায়াপথসমূহের বেগ সামগ্রিকভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এরা পরষ্পর দূরে সরে যাচ্ছে অর্থাৎ মহাবিশ্ব ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছে।

 ★আল- কোরআনে বিগ ব্যাং এর আলোচনা: বিগ ব্যাং সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা অস্বীকার করেছে তারা কি চিন্তা করে না যে, (একদা) এই আসমান ও জমিনের সব কিছুই মিলিত অবস্থায় ছিল, অত:পর আমরা এ গুলোকে আলাদা করে দিয়েছি।"(সূরা আম্বিয়ার আয়াত নং -৩০) এখানে মিলিত অবস্থা বলতে পরস্পরে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকাকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বজগতের প্রাথমিক অবস্থায় এটি একটি পিন্ড ও দলার মতো ছিল। পরে এদেরকে আলাদা-অলাদা ভাগে বিভক্ত করে জমিন ও অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহের আলাদা জগত সৃষ্টি করে দেওয়া হয়েছে। এই আয়াতে "রাতক্ব" এবং "ফাতাক্ব" শব্দদ্বয় দিয়ে বুঝানো হয়েছে যে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের যাবতীয় কিছু একক বস্তুতে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল এবং পরবর্তীতে তা স্বতন্ত্র অস্তিত্বে আলাদা হয়েছিল। এই আয়াতের শব্দদ্বয় "একতা নীতি" বা "প্রিন্সিপল অব সিঙ্গুলারিটি" এর নির্দেশ করে এবং বিগ ব্যাং থিওরীর পরিপূর্ণ ধারণা বহন করে।

 বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে, মহাবিশ্বে ছায়াপথ গঠিত হবার পূর্বে , সব পদার্থ প্রাথমিক ভাবে গ্যাস অবস্থায় ছিল। সংক্ষেপে বলা যায়, ছায়াপথ তৈরির আগে বিপুল পরিমান পদার্থ গ্যাস বা মেঘ অবস্থায় বিদ্যমান ছিল। আসলে মহাবিশ্বের প্রাথমিক অবস্থাকে বর্ণনা করতে “ধোয়া” শব্দটি গ্যাসের থেকে আরও বেশি যথার্থ। কোরআনে মহাবিশ্বের এই অবস্থাকে বর্ণনা করা হয়েছে “দুখা-ন” শব্দ দ্বারা যার অর্থ “ধোয়া”। যেমন-কোরআনে এসেছে- “অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।” [৪১:১১]

তাহলে কোরআন অনুযায়ী এই প্রাকৃতিক মহাবিশ্বকে ‘Be’ কম্যান্ডমেন্ট তথা ‘Big Bang’ এর মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে (২:১১৭, ২১:৩০)… তারপর থেকে মহাবিশ্বকে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে (৫১:৪৭)… ধীরে ধীরে সংকোচনের মাধ্যমেন একদিন ধ্বংস করা হবে (২১:১০৪)… এবং আবারো নতুন করে মহাবিশ্বকে সৃষ্টি করা হবে (২১:১০৪,১৪:৪৮)।

 এই বিগ ব্যাং থিওরীর একটা অনুসিদ্ধান্ত হল "অনবরত দূরে সরে যাওয়া গ্রহ নক্ষত্রগুলো একসময় আবার কাছাকাছি আসা শুরু করবে কেন্দ্রবিমুখী বল শুন্য হয়ে যাওয়ার ফলে এবং সময়ের ব্যাবধানে সব গ্রহ নক্ষত্র আবার একত্রে মিলিত হয়ে একটা পিন্ডে পরিনত হবে"। "সেই দিন আকাশমন্ডলীকে গুটিয়ে ফেলব, যেভাবে গুটানো হয় লিখিত দফতর" (সূরা আম্বিয়া : ১০৪)

ড:মিলার বলেছেন, এই আয়াতটি নিয়ে চিন্তা-গবেষণার পর কোরআন যে ঐশী গ্রন্থ তা মেনে নিতে বাধ্য হই। যারা প্রচার চালাচ্ছে কোরআন হযরত মুহাম্মদ (সা) এর নিজস্ব বক্তব্য তাদের দাবি নাকচ করার জন্য এই একটি আয়াতই যথেষ্ট।(THE AMAZING QURAN ,chap.Origin of the Universe and Life)

 ড:মিলার বলেছেন, দেড় হাজার বছর আগে ইসলামের নবীর পক্ষে কিভাবে মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য নিয়ে কথা বলা সম্ভব, যিনি কোন দিন কোন স্কুলে পড়ালেখা করেন নি। কারণ এটি এমন এক বৈজ্ঞানিক বিষয়, যা সম্পর্কে তত্ত্ব আবিষ্কার করে মাত্র কয়েক বছর আগে ১৯৭৩ সালে নোবেল পুরুস্কার পেয়েছেন এক বিজ্ঞানী। মিলারের মতে এই আয়াতে সেই বিগ ব্যাং এর কথাই বলা হয়েছে যার মাধ্যমে পৃথিবী, আকাশমন্ডলী ও তারকারাজি সৃষ্টি হয়েছে।

 পরিশেষে বলা যায় যে,পবিত্র কোরআন গতানুগতিক কোন বৈজ্ঞানিক থিওরির কিতাব নয়।বরং এটা সৃষ্টকর্তার পক্ষ থেকে মানবজাতির হেদায়েতের আলোকবর্তিকা।তারপরও কোরআনে যে সমস্ত বৈজ্ঞানিক থিওরি আলোচিত হয়েছে পৃথিবী যতই বিজ্ঞানে আলোকিত হবে কোরআনের গূড় রহস্য ততই পরিষ্কার হবে।কোরআনের সাথে বৈজ্ঞানিকের কোন থিওরির যদি বৈপরিত্য দেখা দেয় আমাদেরকে বুঝতে হবে সেই থিওরিতে নিশ্চয় কোন ভুল রয়েছে।কারন মানুষের জ্ঞান হল-সসীম আর আল্লাহর জ্ঞান হল-অসীম।অসীম জ্ঞানের সাথে সসীমের কোন তুলনা হতে পারে না।