বর্তমানে কিছু প্রগতিশীল সেকুলার বুদ্ধিজীবী ইসলামের উপর দোষারোপ করে যে,ইসলাম পুরুষদের বিবেচনায় নারীদের অপমান করেছে।অথচ ইসলাম এমন একটি বিজ্ঞানসম্মত বাস্তববাদী ধর্ম যেখানে নারীদেরকে শুধু সম্মানই দেননি বরং বহু ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় নারীদের মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে দিয়েছেন।নিম্নে এ সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসের আলোকে বিস্তারিত আলোচনা করা হল-
★ইসলামই একমাত্র ধর্ম যেখানে পুরুষদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, ﻭَﺁﺗُﻮﺍ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﺻَﺪُﻗَﺎﺗِﻬِﻦَّ ﻧِﺤْﻠَﺔً “আর তোমরা নারীদেরকে সন্তুষ্টচিত্তে তাদের মোহর দিয়ে দাও।” (সূরা নিসা: আয়াত ৪)এ আয়াতে পুরুষদের উপরে নারীদের মোহরানা আদায় করাকে ফরজ করা হয়েছে।অথচ কোরআন ও হাদিসের কোথাও নারীদের উপরে এমন কোন নির্দেশ দেওয়া হয়নি যে তোমরা পুরুষদেরকে মোহরানা আদায় কর।তাহলে বুঝা যাচ্ছে যে মোহরানার ক্ষেত্রে নারীদেরকে পুরুষদের উপর সম্মান দেওয়া হয়েছে।
★ইসলাম পুরুষদের উপরে তাদের সামর্থ অনুযায়ী নারীদের ভরনপোষন আদায় করা ফরজ করে দিয়েছেন।যেমন পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে - ﺃَﺳْﻜِﻨُﻮﻫُﻦَّ ﻣِﻦْ ﺣَﻴْﺚُ ﺳَﻜَﻨْﺘُﻢْ ﻣِﻦْ ﻭُﺟْﺪِﻛُﻢْ
“তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যেখানে তোমরা বসবাস কর সেখানে তাদেরকেও বাস করতে দাও।”
(সূরা তালাক, আয়াত ৬)
শুধু তাই নয় নারীর নিজের ভরণ-পোষণের পাশাপাশি
সন্তানের দায়িত্বও স্বামীর কাঁধে তুলে দেয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,
ﻟِﻴُﻨْﻔِﻖْ ﺫُﻭ ﺳَﻌَﺔٍ ﻣِﻦْ ﺳَﻌَﺘِﻪِ ﻭَﻣَﻦْ ﻗُﺪِﺭَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺭِﺯْﻗُﻪُ ﻓَﻠْﻴُﻨْﻔِﻖْ ﻣِﻤَّﺎ ﺁﺗَﺎﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ
“বিত্তশালীরা যেনো সামর্থানুযায়ী স্ত্রী- সন্তানের উপর ব্যয় করে। সীমিত উপার্জনকারীরা আল্লাহর দেয়া অর্থানুপাতে ব্যয় করবে।” (সূরা তালাক, আয়াত ৭)
অথচ কোরআন ও হাদিসের কোথাও এ রকম নির্দেশ আসেনি যে, নারীরা পুরুষদের ও সন্তানদের ভরন পোষন বহন করতে হবে।তাহলে এ আয়াতগুলো দ্বারাও নারীদেরকে পুরুষদের উপর বাড়তি সম্মান দান করা হয়েছে।
★ইসলামই একমাত্র ধর্ম যেখানে বেহেশতকে মায়ের পায়ের তলায় ঘোষণা করা হয়েছে।যেমন হাদিস শরীপে এসেছে-
ﻋﻦ ﻣﻌﺎﻭﻳﺔ ﺑﻦ ﺟﺎﻫﻤﺔ ﺃﻧﻪ ﺟﺎﺀ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻘﺎﻝ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﺭﺩﺕ ﺃﻥ ﺃﻏﺰﻭ، ﻭﺟﺌﺖ ﺃﺳﺘﺸﻴﺮﻙ ؟ ﻓﻘﺎﻝ: "ﻫﻞ ﻟﻚ ﻣﻦ ﺃﻡ "؟ ﻗﺎﻝ ﻧﻌﻢ : ﻗﺎﻝ: " ﻓﺎﻟﺰﻣﻬﺎ ﻓﺈﻥ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﺗﺤﺖ ﺭﺟﻠيه
হযরত মুয়াবিয়া বিনতে জাহিমা নবীজীর সা. এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যুদ্ধে যেতে চাচ্ছি। আপনার কাছে পরামর্শের জন্য এসেছি। তিনি বললেন, তোমার মা আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে তাঁকে সঙ্গ দাও। কেননা জান্নাত তাঁর দুই পায়ের নিচে।” (সুনানে নাসাঈ ) অথচ কোরআন ও হাদিসে কোথাও বেহেশতকে পিতার পায়ের নিচে বলা হয়নি।তাহলে এখানেও নারীদেরকে পুরুষদের তুলনায় বেশি সম্মান করা হয়েছে।
★অন্য হাদিসে পুরুষের ও নারীর মর্যাদার ব্যাপারে বলা হয়েছে -
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ﺟﺎﺀ ﺭﺟﻞ ﺇﻟﻰ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻘﺎﻝ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﺃﺣﻖ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺑﺤﺴﻦ ﺻﺤﺎﺑﺘﻲ ؟ ﻗﺎﻝ : ﺃﻣﻚ ,, ﻗﺎﻝ : ﺛﻢ ﻣﻦ ؟ ﻗﺎﻝ : ﺃﻣﻚ, ﻗﺎﻝ : ﺛﻢ ﻣﻦ ؟ ﻗﺎﻝ : ﺃﻣﻚ, ﻗﺎﻝ : ﺛﻢ ﻣﻦ ؟ ﻗﺎﻝ : ﺃﺑﻮﻙ .
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে একবার জিজ্ঞাসা করা হলো যে ইয়া রাসূলাল্লাহ! পিতা-মাতার মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে বেশি সম্মান ও মর্যাদার হকদার কে? প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন, তোমার মা। সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন, তোমার মা। সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন, তোমার মা। এরপর সাহাবী চতুর্থ বার যখন জিজ্ঞেস করলেন যে, তারপর কে? তখন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন, তোমার বাবা।” (বুখারী ও মুসলিম)
এই হাদীসের দ্বারা এটা পরিস্কার হয়ে গেলো যে, নারী জাতিকে ইসলাম মাতৃত্বের উচ্চাসনে বসিয়েছে। তাদেরকে সম্মান ও মর্যাদার সর্বোচ্চ আসনে সমাসীন করেছে।অথচ পুরুষদের ব্যাপারে এমন কোন মর্যাদার কথা কোথাও বলা হয়নি।
★সমাজে কেউ যেনো নারী জাতির অবমাননা করতে না পারে সেটিও ইসলাম নিশ্চিত করেছে। অন্যায়ভাবে কেউ কোনো নারীকে অপবাদ দিলে তার জন্য শাস্তির বিধান দিয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,
ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺮْﻣُﻮﻥَ ﺍﻟْﻤُﺤْﺼَﻨَﺎﺕِ ﺛُﻢَّ ﻟَﻢْ ﻳَﺄْﺗُﻮﺍ ﺑِﺄَﺭْﺑَﻌَﺔِ ﺷُﻬَﺪَﺍﺀَ ﻓَﺎﺟْﻠِﺪُﻭﻫُﻢْ ﺛَﻤَﺎﻧِﻴﻦَ ﺟَﻠْﺪَﺓً ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻘْﺒَﻠُﻮﺍ ﻟَﻬُﻢْ ﺷَﻬَﺎﺩَﺓً ﺃَﺑَﺪًﺍ ﻭَﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻔَﺎﺳِﻘُﻮﻥَ
“আর যারা সচ্চরিত্র নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারপর তারা চারজন সাক্ষী নিয়ে আসে না, তবে তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত কর এবং তোমরা কখনই তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করো না। আর এরাই হলো ফাসিক।” (সুরা আন-নূর: আয়াত ৪)
অথচ পুরুষদের ব্যাপারে এরকম একক নির্দেশ কোথাও বলা হয়নি
★শুধু তাই নয়, নারীদের প্রতিপালনে ইসলাম যে মর্যাদা রেখেছে পুরুষদের জন্য তা রাখা হয়নি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
ﻻَ ﻳَﻜُﻮﻥُ ﻷَﺣَﺪِﻛُﻢْ ﺛَﻼَﺙُ ﺑَﻨَﺎﺕٍ ﺃَﻭْ ﺛَﻼَﺙُ ﺃَﺧَﻮَﺍﺕٍ ﻓَﻴُﺤْﺴِﻦُ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻦَّ ﺇِﻻَّ ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ
. ‘তোমাদের যে কারও যদি তিনজন কন্যা বা বোন থাকে আর সে তাদের সুন্দরমত দেখাশুনা করে, তবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ [12]
তেমনিভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও ইরশাদ করেছেন,
ﺧَﻴْﺮُﻛُﻢْ ﺧَﻴْﺮُﻛُﻢْ ﻷَﻫْﻠِﻪِ ‘
তোমাদের মধ্যে সে-ই সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম।’
এ হাদীসে স্ত্রীর সঙ্গে সদ্ব্যবহারকে পুরুষের চারিত্রিক মর্যাদার মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে। সুতরাং এখন আমরা কি বলবো যে ইসলাম পুরুষের বিপক্ষে বর্ণবৈষম্যকে প্রশ্রয় দিয়েছে?
★ এমনকি ইসলাম ব্যতীত অন্য সকল ধর্মে আজ পর্যন্ত নারী জাতির অধিকারের কোনো স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। হিন্দুধর্মে নারী জাতিকে মৃত্যু, নরক, সর্প, বীষ ও আগুন থেকেও মারাত্মক বলা হয়েছে। স্বামী ছাড়া নারী জাতির আলাদা কোনো অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয় নি। যার কারণে স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকেও তার স্বামীর সাথে সহমরণে যেতে বাধ্য করার কথা বলা হয়েছে। খৃষ্টান ধর্মে নারী জাতিকে চরম লাঞ্চনার বস্তু বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
তাই তো খৃষ্টান পাদ্রী মি: সেন্ট টার্টুলিয়ামের মতে, নারী হচ্ছে বন্য জন্তুর চেয়েও অধিক বিপদজনক। অন্য আরেক পাদ্রী সেন্ট ক্রিয়ান নারীকে বীষধর সাপের সাথে তুলনা করে তার থেকে দূরে সরে থাকতে বলেছেন। সপ্তদশ শতকে খৃষ্টধর্মের রাজধানী রোমে বিত্তবানদের একটি কাউন্সিল সমবেত সকল শীর্ষ ব্যক্তি এই মর্মে সর্বসম্মতিক্রমে একমত হয়েছিল যে, নারীর কোন আত্মা নেই।
ইহুদী ধর্মে নারীকে পুরুষের জন্য প্রতারক বলা হয়েছে। তাদের মতে একজন সতী নারীর চেয়ে একজন পাপিষ্ট পুরুষ বহু গুণে শ্রেষ্ঠ।
বৌদ্ধধর্মে কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করাকে অলক্ষণীয় বলে মনে করা হয়। নারীর কোনো অধিকার আছে বলে স্বীকৃতি দেয় না।
এভাবে ইসলাম ছাড়া অন্য সকল ধর্মেই নারী জাতিকে পাপিষ্ট, অলুক্ষুণে, অপয়া ও ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদেরকে কোনো অধিকার দেয়া তো দূরের কথা, তাদেরকে মানুষ বলেই স্বীকার করা হয়নি। তারা নারীদেরকে কেবলমাত্র ভোগের পণ্য হিসেবেই গণনা করতো।
-এমনিভাবে সর্বত্রই যখন নারী জাতির এমন লাঞ্চনা-গঞ্জনা আর অসম্মান ঠিক সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তে ইসলাম এসে তৎকালীন সেই বর্বর যুগের অমানুষিক জুলুম থেকে নারীকে মুক্ত করেছে।
ইসলামই একমাত্র দীন -যা নারী জাতিকে ফিরিয়ে দিয়েছে তাদের যথাযথ অধিকার। ইসলাম এসে ধাপে ধাপে নারী জাতিকে তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা, সম্মান ও মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। যেই সমাজে নারী জন্মই পাপ বলে গণ্য হতো সেখানে ইসলাম সর্বপ্রথমই নারীজন্মের অধিকার নিশ্চিত করেছে। নারী সন্তানকে হত্যাকারীদের জন্য কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছে। ঘোষণা করেছে
, ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺍﻟْﻤَﻮْﺀُﻭﺩَﺓُ ﺳُﺌِﻠَﺖْ . ﺑِﺄَﻱِّ ﺫَﻧْﺐٍ ﻗُﺘِﻠَﺖْ
“আর স্মরণ করো সেই দিনের কথা! যখন জীবন্ত কবরস্থ কন্যাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে?”
(সুরা তাকউইর, আয়াত ৮-৯)
★একইভাবে ইসলাম নারীদের জন্য সোনা ও রেশমী কাপড় ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। পুরুষের জন্য দেয়নি। নারীদের মাসে প্রায় এক সপ্তাহ এবং বছরে প্রায় একমাস সালাত মাফ করা হয়েছে, যা পুরুষের ক্ষেত্রে করা হয়নি। নারীদেরকে দূর্বল ও অসহায় পেয়ে যাতে করে কেউ তাঁদের উপর জুলুম ও অত্যাচার না করে সেজন্যে ইসলাম ঘোষণা করেছে,
ﻭَﻻَ ﺗُﻤْﺴِﻜُﻮﻫُﻦَّ ﺿِﺮَﺍﺭًﺍ ﻟِّﺘَﻌْﺘَﺪُﻭﺍْ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﻔْﻌَﻞْ ﺫَٰﻟِﻚَ ﻓَﻘَﺪْ ﻇَﻠَﻢَ ﻧَﻔْﺴَﻪُ “আর তোমরা স্ত্রীদেরকে কষ্ট দেয়ার জন্যে আটকে রেখো না। আর যারা এ ধরণের জঘন্যতম অন্যায় করবে তারা নিজেদের উপরই জুলুম করবে।”
(সূরা বাকারা : আয়াত ২৩১)
★এবং নারীদেরকে আল্লাহ তায়ালা অর্থনৈতিকভাবেও স্বাধীন বলে ঘোষণা করেছেন। যেমন আল্লাহ তা’‘আলা বলেন,
ﻟِﻠﺮِّﺟَﺎﻝِ ﻧَﺼِﻴﺐٌ ﻣِﻤَّﺎ ﺍﻛْﺘَﺴَﺒُﻮﺍ ﻭَﻟِﻠﻨِّﺴَﺎﺀِ ﻧَﺼِﻴﺐٌ ﻣِﻤَّﺎ ﺍﻛْﺘَﺴَﺒْﻦَ ‘পুরুষদের জন্য রয়েছে অংশ, তারা যা উপার্জন করে তা থেকে এবং নারীদের জন্য রয়েছে অংশ, যা তারা উপার্জন করে তা থেকে।’
পরিশেষে বলব যে, নারীর অবাস্তব সমানাধিকারের দাবিদাররা যার গান গায় আমরা যদি সেই ফরাসি বিপ্লবের নথিপত্র এবং গণতান্ত্রিক দেশসহ বহু দেশের সংবিধান ঘেঁটে দেখি, তাহলে দেখবো অনেক ক্ষেত্রেই তারা নারীর সেই অধিকারগুলোর স্বীকৃতি মাত্র সেদিন দিয়েছে, ইসলাম যা প্রতিষ্ঠা করেছে চৌদ্দশ বছর আগে! শুধু তাই নয়, বরং অনেক অধিকার এমনও আছে যার স্বীকৃতি আজো তারা দেয়নি। যেমন পরিবারে নারীর আর্থিক দায়িত্ব ক্ষমা করা এবং তাকে যাবতীয় অর্থনৈতিক ভার থেকে অব্যহতি দেয়া ইত্যাদি।
★ইসলামই একমাত্র ধর্ম যেখানে পুরুষদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, ﻭَﺁﺗُﻮﺍ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﺻَﺪُﻗَﺎﺗِﻬِﻦَّ ﻧِﺤْﻠَﺔً “আর তোমরা নারীদেরকে সন্তুষ্টচিত্তে তাদের মোহর দিয়ে দাও।” (সূরা নিসা: আয়াত ৪)এ আয়াতে পুরুষদের উপরে নারীদের মোহরানা আদায় করাকে ফরজ করা হয়েছে।অথচ কোরআন ও হাদিসের কোথাও নারীদের উপরে এমন কোন নির্দেশ দেওয়া হয়নি যে তোমরা পুরুষদেরকে মোহরানা আদায় কর।তাহলে বুঝা যাচ্ছে যে মোহরানার ক্ষেত্রে নারীদেরকে পুরুষদের উপর সম্মান দেওয়া হয়েছে।
★ইসলাম পুরুষদের উপরে তাদের সামর্থ অনুযায়ী নারীদের ভরনপোষন আদায় করা ফরজ করে দিয়েছেন।যেমন পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে - ﺃَﺳْﻜِﻨُﻮﻫُﻦَّ ﻣِﻦْ ﺣَﻴْﺚُ ﺳَﻜَﻨْﺘُﻢْ ﻣِﻦْ ﻭُﺟْﺪِﻛُﻢْ
“তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যেখানে তোমরা বসবাস কর সেখানে তাদেরকেও বাস করতে দাও।”
(সূরা তালাক, আয়াত ৬)
শুধু তাই নয় নারীর নিজের ভরণ-পোষণের পাশাপাশি
সন্তানের দায়িত্বও স্বামীর কাঁধে তুলে দেয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,
ﻟِﻴُﻨْﻔِﻖْ ﺫُﻭ ﺳَﻌَﺔٍ ﻣِﻦْ ﺳَﻌَﺘِﻪِ ﻭَﻣَﻦْ ﻗُﺪِﺭَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺭِﺯْﻗُﻪُ ﻓَﻠْﻴُﻨْﻔِﻖْ ﻣِﻤَّﺎ ﺁﺗَﺎﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ
“বিত্তশালীরা যেনো সামর্থানুযায়ী স্ত্রী- সন্তানের উপর ব্যয় করে। সীমিত উপার্জনকারীরা আল্লাহর দেয়া অর্থানুপাতে ব্যয় করবে।” (সূরা তালাক, আয়াত ৭)
অথচ কোরআন ও হাদিসের কোথাও এ রকম নির্দেশ আসেনি যে, নারীরা পুরুষদের ও সন্তানদের ভরন পোষন বহন করতে হবে।তাহলে এ আয়াতগুলো দ্বারাও নারীদেরকে পুরুষদের উপর বাড়তি সম্মান দান করা হয়েছে।
★ইসলামই একমাত্র ধর্ম যেখানে বেহেশতকে মায়ের পায়ের তলায় ঘোষণা করা হয়েছে।যেমন হাদিস শরীপে এসেছে-
ﻋﻦ ﻣﻌﺎﻭﻳﺔ ﺑﻦ ﺟﺎﻫﻤﺔ ﺃﻧﻪ ﺟﺎﺀ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻘﺎﻝ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﺭﺩﺕ ﺃﻥ ﺃﻏﺰﻭ، ﻭﺟﺌﺖ ﺃﺳﺘﺸﻴﺮﻙ ؟ ﻓﻘﺎﻝ: "ﻫﻞ ﻟﻚ ﻣﻦ ﺃﻡ "؟ ﻗﺎﻝ ﻧﻌﻢ : ﻗﺎﻝ: " ﻓﺎﻟﺰﻣﻬﺎ ﻓﺈﻥ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﺗﺤﺖ ﺭﺟﻠيه
হযরত মুয়াবিয়া বিনতে জাহিমা নবীজীর সা. এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যুদ্ধে যেতে চাচ্ছি। আপনার কাছে পরামর্শের জন্য এসেছি। তিনি বললেন, তোমার মা আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে তাঁকে সঙ্গ দাও। কেননা জান্নাত তাঁর দুই পায়ের নিচে।” (সুনানে নাসাঈ ) অথচ কোরআন ও হাদিসে কোথাও বেহেশতকে পিতার পায়ের নিচে বলা হয়নি।তাহলে এখানেও নারীদেরকে পুরুষদের তুলনায় বেশি সম্মান করা হয়েছে।
★অন্য হাদিসে পুরুষের ও নারীর মর্যাদার ব্যাপারে বলা হয়েছে -
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ﺟﺎﺀ ﺭﺟﻞ ﺇﻟﻰ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻘﺎﻝ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﺃﺣﻖ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺑﺤﺴﻦ ﺻﺤﺎﺑﺘﻲ ؟ ﻗﺎﻝ : ﺃﻣﻚ ,, ﻗﺎﻝ : ﺛﻢ ﻣﻦ ؟ ﻗﺎﻝ : ﺃﻣﻚ, ﻗﺎﻝ : ﺛﻢ ﻣﻦ ؟ ﻗﺎﻝ : ﺃﻣﻚ, ﻗﺎﻝ : ﺛﻢ ﻣﻦ ؟ ﻗﺎﻝ : ﺃﺑﻮﻙ .
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে একবার জিজ্ঞাসা করা হলো যে ইয়া রাসূলাল্লাহ! পিতা-মাতার মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে বেশি সম্মান ও মর্যাদার হকদার কে? প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন, তোমার মা। সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন, তোমার মা। সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন, তোমার মা। এরপর সাহাবী চতুর্থ বার যখন জিজ্ঞেস করলেন যে, তারপর কে? তখন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন, তোমার বাবা।” (বুখারী ও মুসলিম)
এই হাদীসের দ্বারা এটা পরিস্কার হয়ে গেলো যে, নারী জাতিকে ইসলাম মাতৃত্বের উচ্চাসনে বসিয়েছে। তাদেরকে সম্মান ও মর্যাদার সর্বোচ্চ আসনে সমাসীন করেছে।অথচ পুরুষদের ব্যাপারে এমন কোন মর্যাদার কথা কোথাও বলা হয়নি।
★সমাজে কেউ যেনো নারী জাতির অবমাননা করতে না পারে সেটিও ইসলাম নিশ্চিত করেছে। অন্যায়ভাবে কেউ কোনো নারীকে অপবাদ দিলে তার জন্য শাস্তির বিধান দিয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,
ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺮْﻣُﻮﻥَ ﺍﻟْﻤُﺤْﺼَﻨَﺎﺕِ ﺛُﻢَّ ﻟَﻢْ ﻳَﺄْﺗُﻮﺍ ﺑِﺄَﺭْﺑَﻌَﺔِ ﺷُﻬَﺪَﺍﺀَ ﻓَﺎﺟْﻠِﺪُﻭﻫُﻢْ ﺛَﻤَﺎﻧِﻴﻦَ ﺟَﻠْﺪَﺓً ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻘْﺒَﻠُﻮﺍ ﻟَﻬُﻢْ ﺷَﻬَﺎﺩَﺓً ﺃَﺑَﺪًﺍ ﻭَﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻔَﺎﺳِﻘُﻮﻥَ
“আর যারা সচ্চরিত্র নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারপর তারা চারজন সাক্ষী নিয়ে আসে না, তবে তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত কর এবং তোমরা কখনই তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করো না। আর এরাই হলো ফাসিক।” (সুরা আন-নূর: আয়াত ৪)
অথচ পুরুষদের ব্যাপারে এরকম একক নির্দেশ কোথাও বলা হয়নি
★শুধু তাই নয়, নারীদের প্রতিপালনে ইসলাম যে মর্যাদা রেখেছে পুরুষদের জন্য তা রাখা হয়নি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
ﻻَ ﻳَﻜُﻮﻥُ ﻷَﺣَﺪِﻛُﻢْ ﺛَﻼَﺙُ ﺑَﻨَﺎﺕٍ ﺃَﻭْ ﺛَﻼَﺙُ ﺃَﺧَﻮَﺍﺕٍ ﻓَﻴُﺤْﺴِﻦُ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻦَّ ﺇِﻻَّ ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ
. ‘তোমাদের যে কারও যদি তিনজন কন্যা বা বোন থাকে আর সে তাদের সুন্দরমত দেখাশুনা করে, তবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ [12]
তেমনিভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও ইরশাদ করেছেন,
ﺧَﻴْﺮُﻛُﻢْ ﺧَﻴْﺮُﻛُﻢْ ﻷَﻫْﻠِﻪِ ‘
তোমাদের মধ্যে সে-ই সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম।’
এ হাদীসে স্ত্রীর সঙ্গে সদ্ব্যবহারকে পুরুষের চারিত্রিক মর্যাদার মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে। সুতরাং এখন আমরা কি বলবো যে ইসলাম পুরুষের বিপক্ষে বর্ণবৈষম্যকে প্রশ্রয় দিয়েছে?
★ এমনকি ইসলাম ব্যতীত অন্য সকল ধর্মে আজ পর্যন্ত নারী জাতির অধিকারের কোনো স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। হিন্দুধর্মে নারী জাতিকে মৃত্যু, নরক, সর্প, বীষ ও আগুন থেকেও মারাত্মক বলা হয়েছে। স্বামী ছাড়া নারী জাতির আলাদা কোনো অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয় নি। যার কারণে স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকেও তার স্বামীর সাথে সহমরণে যেতে বাধ্য করার কথা বলা হয়েছে। খৃষ্টান ধর্মে নারী জাতিকে চরম লাঞ্চনার বস্তু বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
তাই তো খৃষ্টান পাদ্রী মি: সেন্ট টার্টুলিয়ামের মতে, নারী হচ্ছে বন্য জন্তুর চেয়েও অধিক বিপদজনক। অন্য আরেক পাদ্রী সেন্ট ক্রিয়ান নারীকে বীষধর সাপের সাথে তুলনা করে তার থেকে দূরে সরে থাকতে বলেছেন। সপ্তদশ শতকে খৃষ্টধর্মের রাজধানী রোমে বিত্তবানদের একটি কাউন্সিল সমবেত সকল শীর্ষ ব্যক্তি এই মর্মে সর্বসম্মতিক্রমে একমত হয়েছিল যে, নারীর কোন আত্মা নেই।
ইহুদী ধর্মে নারীকে পুরুষের জন্য প্রতারক বলা হয়েছে। তাদের মতে একজন সতী নারীর চেয়ে একজন পাপিষ্ট পুরুষ বহু গুণে শ্রেষ্ঠ।
বৌদ্ধধর্মে কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করাকে অলক্ষণীয় বলে মনে করা হয়। নারীর কোনো অধিকার আছে বলে স্বীকৃতি দেয় না।
এভাবে ইসলাম ছাড়া অন্য সকল ধর্মেই নারী জাতিকে পাপিষ্ট, অলুক্ষুণে, অপয়া ও ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদেরকে কোনো অধিকার দেয়া তো দূরের কথা, তাদেরকে মানুষ বলেই স্বীকার করা হয়নি। তারা নারীদেরকে কেবলমাত্র ভোগের পণ্য হিসেবেই গণনা করতো।
-এমনিভাবে সর্বত্রই যখন নারী জাতির এমন লাঞ্চনা-গঞ্জনা আর অসম্মান ঠিক সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তে ইসলাম এসে তৎকালীন সেই বর্বর যুগের অমানুষিক জুলুম থেকে নারীকে মুক্ত করেছে।
ইসলামই একমাত্র দীন -যা নারী জাতিকে ফিরিয়ে দিয়েছে তাদের যথাযথ অধিকার। ইসলাম এসে ধাপে ধাপে নারী জাতিকে তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা, সম্মান ও মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। যেই সমাজে নারী জন্মই পাপ বলে গণ্য হতো সেখানে ইসলাম সর্বপ্রথমই নারীজন্মের অধিকার নিশ্চিত করেছে। নারী সন্তানকে হত্যাকারীদের জন্য কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছে। ঘোষণা করেছে
, ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺍﻟْﻤَﻮْﺀُﻭﺩَﺓُ ﺳُﺌِﻠَﺖْ . ﺑِﺄَﻱِّ ﺫَﻧْﺐٍ ﻗُﺘِﻠَﺖْ
“আর স্মরণ করো সেই দিনের কথা! যখন জীবন্ত কবরস্থ কন্যাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে?”
(সুরা তাকউইর, আয়াত ৮-৯)
★একইভাবে ইসলাম নারীদের জন্য সোনা ও রেশমী কাপড় ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। পুরুষের জন্য দেয়নি। নারীদের মাসে প্রায় এক সপ্তাহ এবং বছরে প্রায় একমাস সালাত মাফ করা হয়েছে, যা পুরুষের ক্ষেত্রে করা হয়নি। নারীদেরকে দূর্বল ও অসহায় পেয়ে যাতে করে কেউ তাঁদের উপর জুলুম ও অত্যাচার না করে সেজন্যে ইসলাম ঘোষণা করেছে,
ﻭَﻻَ ﺗُﻤْﺴِﻜُﻮﻫُﻦَّ ﺿِﺮَﺍﺭًﺍ ﻟِّﺘَﻌْﺘَﺪُﻭﺍْ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﻔْﻌَﻞْ ﺫَٰﻟِﻚَ ﻓَﻘَﺪْ ﻇَﻠَﻢَ ﻧَﻔْﺴَﻪُ “আর তোমরা স্ত্রীদেরকে কষ্ট দেয়ার জন্যে আটকে রেখো না। আর যারা এ ধরণের জঘন্যতম অন্যায় করবে তারা নিজেদের উপরই জুলুম করবে।”
(সূরা বাকারা : আয়াত ২৩১)
★এবং নারীদেরকে আল্লাহ তায়ালা অর্থনৈতিকভাবেও স্বাধীন বলে ঘোষণা করেছেন। যেমন আল্লাহ তা’‘আলা বলেন,
ﻟِﻠﺮِّﺟَﺎﻝِ ﻧَﺼِﻴﺐٌ ﻣِﻤَّﺎ ﺍﻛْﺘَﺴَﺒُﻮﺍ ﻭَﻟِﻠﻨِّﺴَﺎﺀِ ﻧَﺼِﻴﺐٌ ﻣِﻤَّﺎ ﺍﻛْﺘَﺴَﺒْﻦَ ‘পুরুষদের জন্য রয়েছে অংশ, তারা যা উপার্জন করে তা থেকে এবং নারীদের জন্য রয়েছে অংশ, যা তারা উপার্জন করে তা থেকে।’
পরিশেষে বলব যে, নারীর অবাস্তব সমানাধিকারের দাবিদাররা যার গান গায় আমরা যদি সেই ফরাসি বিপ্লবের নথিপত্র এবং গণতান্ত্রিক দেশসহ বহু দেশের সংবিধান ঘেঁটে দেখি, তাহলে দেখবো অনেক ক্ষেত্রেই তারা নারীর সেই অধিকারগুলোর স্বীকৃতি মাত্র সেদিন দিয়েছে, ইসলাম যা প্রতিষ্ঠা করেছে চৌদ্দশ বছর আগে! শুধু তাই নয়, বরং অনেক অধিকার এমনও আছে যার স্বীকৃতি আজো তারা দেয়নি। যেমন পরিবারে নারীর আর্থিক দায়িত্ব ক্ষমা করা এবং তাকে যাবতীয় অর্থনৈতিক ভার থেকে অব্যহতি দেয়া ইত্যাদি।