Wednesday, October 5, 2016

মহররম ও আশুরার দিনের ফজিলত।

আরবি বছরের প্রথম মাস মুহাররম। আরবি বারটি মাসের মধ্যে যে চারটি মাসকে হারাম বা সম্মানিত বলে কুরআন শরিফ ও হাদিস শরিফ-এ ঘোষণা করা হয়েছে, মুহাররম মাস তার মধ্যে অন্যতম। আসমান-জমিন সৃষ্টিকাল হতেই এ মাসটি বিশেষভাবে সম্মানিত হয়ে আসছে। এটি ‘আশহুরে হুরুম’ তথা হারামকৃত মাস চতুষ্টয়ের অন্যতম। আশহুরে হুরুম সম্বন্ধে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﺇِﻥَّ ﻋِﺪَّﺓَ ﭐﻟﺸُّﻬُﻮﺭِ ﻋِﻨﺪَ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﭐﺛۡﻨَﺎ ﻋَﺸَﺮَ ﺷَﻬۡﺮٗﺍ ﻓِﻲ ﻛِﺘَٰﺐِ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﻳَﻮۡﻡَ ﺧَﻠَﻖَ ﭐﻟﺴَّﻤَٰﻮَٰﺕِ ﻭَﭐﻟۡﺄَﺭۡﺽَ ﻣِﻨۡﻬَﺎٓ ﺃَﺭۡﺑَﻌَﺔٌ ﺣُﺮُﻡٞۚ ﺫَٰﻟِﻚَ ﭐﻟﺪِّﻳﻦُ ﭐﻟۡﻘَﻴِّﻢُۚ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﻈۡﻠِﻤُﻮﺍْ ﻓِﻴﻬِﻦَّ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢۡۚ # ﺍﻟﺘﻮﺑﺔ : ٣٦ “নিশ্চয় মাসসমূহের গণনা আল্লাহর কাছে বার মাস আল্লাহর কিতাবে, (সেদিন থেকে) যেদিন তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্য থেকে চারটি সম্মানিত, এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন। সুতরাং তোমরা এ মাসসমূহে নিজদের উপর কোন যুলুম করো না।{সূরা আত-তাওবাহ: ৩৬} এ মাসেরই দশ তারিখ অর্থাৎ ১০ই মুহাররম “আশূরা” দিনটি বিশ্বব্যাপী এক আলোচিত দিন। সৃষ্টির সূচনা হয় এই দিনে এবং সৃষ্টির সমাপ্তিও ঘটবে এ দিনেই। বিশেষ বিশেষ সৃষ্টি এ দিনেই করা হয় এবং বিশেষ বিশেষ ঘটনা এ দিনেই সংঘটিত হয । ★ইতিহাসে আশুরা: আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ﻗﺎﻝ : ﻗﺪﻡ ﺍﻟﻨﺒﻲ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﺍﻟﻤﺪﻳﻨﺔ ﻓﺮﺃﻯ ﺍﻟﻴﻬﻮﺩ ﺗﺼﻮﻡ ﻳﻮﻡ ﻋﺎﺷﻮﺭﺍﺀ ﻓﻘﺎﻝ } : ﻣَﺎ ﻫَﺬَﺍ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻫَﺬَﺍ ﻳَﻮْﻡٌ ﺻَﺎﻟِﺢٌ، ﻫَﺬَﺍ ﻳَﻮْﻡٌ ﻧَﺠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺑَﻨِﻲ ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ ﻣِﻦْ ﻋَﺪُﻭِّﻫِﻢْ ﻓَﺼَﺎﻣَﻪُ ﻣُﻮﺳَﻰ، ﻗﺎﻝ : ﻓَﺄَﻧَﺎ ﺃَﺣَﻖُّ ﺑِﻤُﻮﺳَﻰ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻓَﺼَﺎﻣَﻪُ ﻭَﺃَﻣَﺮَ ﺑِﺼِﻴَﺎﻣِﻪِ { ‏[ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ 1865]. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করে দেখতে পেলেন ইয়াহূদীরা আশুরার দিন সাওম পালন করছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটি কি? তারা বলল, এটি একটি ভাল দিন। এ দিনে আল্লাহ তা‘আলা বনি ইসরাইলকে তাদের দুশমনের কবল থেকে বাঁচিয়েছেন। তাই মুসা আলাইহিস সালম সাওম পালন করেছেন। রাসূলুল্লাহ বললেন, মুসাকে অনুসরণের ব্যাপারে আমি তোমাদের চেয়ে অধিক হকদার। অতঃপর তিনি সাওম পালন করেছেন এবং সাওম পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন। {বুখারী:১৮৬৫ ইমাম আহমাদ সামান্য বর্ধিতাকারে বর্ণনা করেছেন, ﻭﻫﻮ ﺍﻟﻴﻮﻡ ﺍﻟﺬﻱ ﺍﺳﺘﻮﺕ ﻓﻴﻪ ﺍﻟﺴﻔﻴﻨﺔ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺠﻮﺩﻱ ﻓﺼﺎﻣﻪ ﻧﻮﺡ ﺷﻜﺮﺍً . এটি সেই দিন যাতে নূহ আ.-এর কিশতি জুদি পর্বতে স্থির হয়েছিল, তাই নূহ আ. আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ার্থে সেদিন সাওম পালন করেছিলেন। ★আশুরার রোজার ফজিলত: আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ﻣَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺘَﺤَﺮَّﻯ ﺻِﻴَﺎﻡَ ﻳَﻮْﻡٍ ﻓَﻀَّﻠَﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﻏَﻴْﺮِﻩِ ﺇِﻟّﺎ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻭَﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮَ ﻳَﻌْﻨِﻲ ﺷَﻬْﺮَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সাওম পালন করার জন্য এত অধিক আগ্রহী হতে দেখিনি যত দেখেছি এই আশুরার দিন এবং এই মাস অর্থাৎ রমযান মাসের সাওমের প্রতি। {বুখারী: ১৮৬৭} রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, ﺻﻴﺎﻡ ﻳﻮﻡ ﻋﺎﺷﻮﺭﺍﺀ، ﺇﻧﻲ ﺃﺣﺘﺴﺐ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻥ ﻳﻜﻔﺮ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺍﻟﺘﻲ ﻗﺒﻠﻪ আশুরার দিনের সাওমের ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি, তিনি পূর্ববর্তী এক বছরের পাপ ক্ষমা করে দেবেন। {সহিহ মুসলিম:১৯৭৬} এটি আমাদের প্রতি মহান আল্লাহর অপার করুণা। তিনি একটি মাত্র দিনের সাওমের মাধ্যমে পূর্ণ এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেন। সত্যই মহান আল্লাহ পরম দাতা। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡِ ﺑَﻌْﺪَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺷَﻬْﺮُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟْﻤُﺤَﺮَّﻡُ অর্থাৎ রমযানের সাওমের পরে সর্বোত্তম সাওম হচ্ছে আল্লাহর মাস মুহাররাম মাসের রোজা। { সহিহ মুসলিম: ১৯৮২} ★আশুরার সাথে তাসু‘আর সাওমও মুস্তাহাব :: আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন, ﺣِﻴﻦَ ﺻَﺎﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻭَﺃَﻣَﺮَ ﺑِﺼِﻴَﺎﻣِﻪِ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺇِﻧَّﻪُ ﻳَﻮْﻡٌ ﺗُﻌَﻈِّﻤُﻪُ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩُ ﻭَﺍﻟﻨَّﺼَﺎﺭَﻯ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : " ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟْﻌَﺎﻡُ ﺍﻟْﻤُﻘْﺒِﻞُ ﺇِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺻُﻤْﻨَﺎ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﺍﻟﺘَّﺎﺳِﻊَ ." ﻗَﺎﻝَ ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺄْﺕِ ﺍﻟْﻌَﺎﻡُ ﺍﻟْﻤُﻘْﺒِﻞُ ﺣَﺘَّﻰ ﺗُﻮُﻓِّﻲَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ অর্থাৎ যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার সাওম পালন করলেন এবং (অন্যদেরকে) সাওম পালন করার নির্দেশ দিলেন। লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এটিতো এমন দিন, যাকে ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টানরা বড় জ্ঞান করে, সম্মান জানায়। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আগামী বছর এদিন আসলে, আমরা নবম দিনও সাওম পালন করব ইনশাল্লাহ। বর্ণনাকারী বলছেন, আগামী বছর আসার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত হয়ে গিয়েছে। {সহিহ মুসলিম} ইমাম শাফেয়ি ও তাঁর সাথীবৃন্দ, ইমাম আহমাদ, ইমাম ইসহাক প্রমুখ বলেছেন, আশুরার সাওমের ক্ষেত্রে দশম ও নবম উভয় দিনের সাওমই মুস্তাহাব। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশ তারিখ সাওম রেখেছেন এবং নয় তারিখ সাওম পালন করার নিয়ত করেছেন। এরই উপর ভিত্তি করে বলা যায়, আশুরার সাওমের কয়েকটি স্তর রয়েছে: সর্ব নিম্ন হচ্ছে কেবল দশ তারিখের সাওম পালন করা। এরচে উচ্চ পর্যায় হচ্ছে তার সাথে নয় তারিখের সাওম পালন করা। এমনিভাবে মুহাররাম মাসে সাওমের সংখ্যা যত বেশি হবে মর্যাদা ও ফজিলতও ততই বাড়তে থাকবে। ★আশুরার তাৎপর্য: ১০ই মুহাররম হযরত আলী রা. এর নয়নমণি নবী তনয় ফাতিমার রা.-এর কলিব্জার টুকরা ইমাম হুসাইনের স্বপরিবারের উনিশজন সদস্যসহ তাঁর বাহাত্তরজন অনুসারীকে যেভাবে ইয়াজিদ বাহিনী কর্তৃক নির্মমভাবে শাহাদত বরণ করতে হয়েছিল কিয়ামত পর্যন্ত বিশ্ব মুসলিমের হৃদয়কে যে ব্যথিত করবে তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। আর তাই মুহাররম মাসের আগমনে নতুন করে মুসলমানদের হৃদয়ের নিভৃতে মুহররমের নির্মম স্মৃতি যেন সকল ঐতিহাসিক ঘটনাকে ম্লান করে দেয়। ঈমানদার মাত্রই এহেন নির্মম ঘটনায় মর্মাহত হবে এবং হওয়াই ঈমানের দাবী। আমাদের কিছু সংখ্যক অজ্ঞ মুসলমান কারবালার হৃদয় বিদারক ঘটনাকে স্মরণ করে নিজেদের মনগড়া কিছু কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে এই দিনের তাৎপর্যকে নষ্ট করে। ঐদিন তারা তাজিয়া তৈরি করে পথ ঘাটে বুক থাবরিয়ে মাতম করে। ইমাম হুসাইনের কৃত্রিম কবর তৈরি করে অনৈসলামিক ‘কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়। আসলে আশুরার দিনে যারা তাজিয়া তৈরি করে পথে প্রান্তরে পর্তন কুর্দন ও অন্যান্য অনৈসলামিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে ইমাম হুসাইন রা. এর স্মৃতি বিজড়িত ঘটনাকে লোক চোখে তুলে ধরতে চায় তা ইসলাম সমর্থন নয় । যদিও অনেকের ধারণা কারবালার শোকাহত ও মর্মস্পশী ঘটনাই মুহাররম মাসের বৈশিষ্ট্য। আসলে তা ঠিক নয়। পৃথিবীর শুরু থেকেই মাহে মুহাররম দশম দিবস অতি পূণ্যময় ও তাৎপর্যপূর্ণ এবং এ মাসটি অত্যন্ত সম্মানীত ও মর্যাদাপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত। জাহিলিয়াতের যুগেও আরবের মুর্খরা এ মাসটিকে সবিশেষ গুরুত্ব দিত। এমনকি এ মাসকে অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ বিবেচনা করে অন্যায়, অবিচার, জুলুম-অত্যাচার, ঝগড়া-বিবাদ, দাঁঙ্গা-হাঙ্গামা, রাহাজানি ও যুদ্ধ-বিগ্রহ এড়িয়ে চলতো। আশুরা শুধু উম্মতে মোহাম্মদীর জন্যই নয় বরং পূর্ববর্তী উম্মতের কাছেও একটি ফজিলতপূর্ণ দিন হিসাবে বিবেচিত হতো। বস্তুতঃ অতীতে আশুরা দিবসে বহু স্মরণীয় ঘটনা ঘটেছে, কেননা আদিকাল থেকে যুগে যুগে আশুরা দিবসে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত হওয়ার কথা বিভিন্ন সূত্রে আমাদের কাছে পৌঁছেছে। দৃষ্টান্ত স্বরূপ আমরা জেনেছি আল্লাহ্ রাববুল আলামিন যেদিন আকাশ, বাতাস, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, জান্নাত-জাহান্নাম, লাউহু মাহফুজ ও যাবতীয় সৃষ্টি জীবের আত্মাসৃজন করেন, সে দিনটি ছিল ১০ই মুহাররম তথা আশুরা দিবস। শুধু তাই নয় বরং আদম আ. এর সৃষ্টির দিন ও ছিল ১০ই মুহারম, হযরত নূহ আ. এর জাহাজ ৮০জন সহচর নিয়ে যেদিন নিরাপদে জুদী পর্বতে অবতরণ করেছিল সে দিনটিও ছিল ১০ই মুহাররম। এভাবে হযরত ইউসুফ আ. এর কুপ থেকে উদ্ধার। আয়ুব আ. এর আরোগ্য লাভ, হযরত ইউনুস আ. এর মৎস উদর হতে মুক্তি লাভ, মূসা আ. এর পরিত্রাণ, হযরত ইবরাহিম আ. নমরুদের অগ্নিকুন্ড থেকে মুক্তি পেয়ে ছিলেন যে দিনটিতে সে দিনটিও ছিল ১০ই মুহাররম। শুধু কী তাই? বরং ঐদিন অর্থাৎ ১০ইং মুহাররমেই হাশর ও কিয়ামত সংঘটিত হবে বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। বস্তুতঃ যে আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য ইমাম হুসাইন রা. একদিন কারবালার প্রান্তরে শহিদ হয়ে ছিলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেই আদর্শকে আমাদের আঁকড়ে ধরতে হবে। আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে ইসলামি মূল্যবোধকে জাগ্রত করার শপথ গ্রহণ করতে হবে। ঐদিন তাজিয়া নিয়ে নর্তন-কুর্দন করার দিন নয়। আমাদের প্রত্যেককেই ঐ দিনটির যথার্থ মূল্যায়ন করতে হবে। আর তখনই মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে যখন আমরা এ মাসের ইতিহাসের প্রতি লক্ষ্য রেখে তা থেকে শিক্ষণীয় , বর্জনীয় ও করণীয় বিষয় এবং তার আদর্শ ও কার্যকলাপ আমাদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে সমাজ ও রাষ্ট্রিয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করতে পারবো।আমিন!

No comments:

Post a Comment