উইকিপিডিয়া থেকে শুরু করে অনেক জায়গায় দেখেছি
রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবন ও কর্মের
অধ্যায়ে সমালোচনা নামক একটি চাপ্টার থাকে। সেখানে
এক কথায় বলে দেওয়া হয় বিভিন্ন যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে
হত্যা ও বন্দি এবং কৃতদাস বানানোর মাধ্যমে নাকি রাসুলুল্লাহ
সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হিংস্র রুপ বিশ্ব বাসীর কাছে
পরিস্কার হয়ে গেছে। নাউযুবিল্লাহ।
আজ রাসূলের সাঃ বিভিন্ন যুদ্ধ এবং যুদ্ধে রাসূলের আচরন
নিয়েই আলোচনা করব ৷
★যুদ্ধ বন্দিদের প্রতি বিধান গুলো নিম্নরূপ,
(1) অর্থ নিয়ে ছেড়ে দিতে পারবে,
(2) অর্থ ছাড়াও দয়া প্রদর্শন করে ছেড়ে দিতে পারবে ৷ (3) হত্যা করতে পারবে ৷
(4)বন্দিকে দাস বানাতে পারবে এবং লালন -পালনের, বা ভরন পোষনের সামর্থ না থাকলে অন্যের কাছে বিক্রি করতে পারবে ৷
(5) তবে মুসলমান হয়ে গেলে আর বন্দি রাখা যাবে না।
(6) নিজে যা খাবে, পরবে তাকেও তা খাওয়াতে ও পরাতে হবে ৷
(7) একটা থাপ্পর দিলেও, আযাদ না করলে জাহান্নামে যেতে হবে ৷
★রাসূল সাঃ যুদ্ধে কি করেছেন??
বদরের যুদ্ধ :
২ হিজরির ১৭ রমজান (১৩ মার্চ ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দ) মদিনার মুসলিম ও মক্কার কুরাইশদের মধ্যে সংঘটিত হয়। ইসলামের ইতিহাসে এটি প্রথম প্রধান যুদ্ধ। বদর ছিল দুই বাহিনীর মধ্যে প্রথম বড় আকারের যুদ্ধ। যুদ্ধে সুসংগঠিত মুসলিমরা মক্কার সৈনিকদের সারি ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয়। যুদ্ধে মুসলিমদের প্রধান প্রতিপক্ষ আবু জাহল নিহত হয় এবং 70 জন বন্দি হয় ৷ তাদের 2 জনকে অতীতের ভয়ংকর অপরাধের জন্য হত্যা করা হয় ৷ যারা সম্পদশালী ছিল তাদের কাছ হতে অর্থ নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় ৷ যারা শিক্ষিত ছিল তাদের প্রত্যেককে 10 জন মুসলমানকে শিক্ষা দানের বিনিময় মুক্তি দেয়া হয় এবং যারা গরিব ও অশিক্ষিত তাদের বিশেষ ক্ষমা প্রদান করা হয় ৷
উহুদের যুদ্ধ :
৩ হিজরির ৭ শাওয়াল (২৩ মার্চ ৬২৫ খ্রিষ্টাব্দ) উহুদ পর্বতের সংলগ্ন স্থানে সংঘটিত হয়।[২] মদিনার মুসলিম ও মক্কার কুরাইশদের মধ্যে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এই দুই পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন যথাক্রমে মুহাম্মাদ (সা) ও আবু সুফিয়ান। ইসলামের ইতিহাসে সংঘটিত প্রধান যুদ্ধসমূহের মধ্যে এটি দ্বিতীয়। এর পূর্বে ৬২৪ সালে এই দুইপক্ষের মধ্যে বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল৷ এই যুদ্ধে রাসূলের সাঃ চাচা হামজা রাঃ সহ 70 জন সাহাবী শহীদ হয় ৷কোন মুশরিক বন্দি হয় নাই ৷
খন্দকের যুদ্ধ বা আহযাবের যুদ্ধ::
৫ হিজরিতে (৬২৭ খ্রিষ্টাব্দ) সংঘটিত হয়। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। জোট বাহিনীর সেনাসংখ্যা ছিল প্রায় ১০,০০০ এবং সেসাথে তাদের ৬০০ ঘোড়া ও কিছু উট ছিল। অন্যদিকে মদিনার বাহিনীতে সেনাসংখ্যা ছিল ৩,০০০। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে মুহাম্মাদ (সা) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন।প্রাকৃতিকভা বে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণকারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কুরাইজা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়।
বনু কুরাইজার যুদ্ধ::
খন্দকের যুদ্ধের পর কোরাইশদের সহযোগি এই গোত্রের সাথে মুসলিমদের যুদ্ধ হয় ৷ তারা দুর্গের মধ্যে অবস্থান নেয় ৷যথারীতি অনেকদিন দূর্গের মধ্যে অবরূদ্ধ থেকে যখন তারা দেখলো যে খায়বার থেকে ইহুদী বাহীনির আসার কোনোই সম্ভবনা নেই তখন তারা আত্মসমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে রাসুল (সাঃ) এর কাছে আত্মসমর্পন না করে তারা তাদের পুরোনো মিত্র সাদ-বিন- মুয়াদের (রাঃ) কাছে নিজেদের ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেয়।সাদ রাঃছিলেন যুদ্ধে আহত যোদ্ধাদের একজন ৷
রাসূলের অনুপস্থিতে ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থের বিধান অনুযায়ী সাদ (রাঃ)বিচার করেন এবং সিদ্ধান্ত দেন কুরাইযা গোত্রের সকল যোদ্ধাদের প্রাণদণ্ড দেয়া হোক আর মহিলা ও শিশুদের বন্দী করা হোক। রায় দেয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই গুরুতর আহত সাদ (রাঃ) মারা যান ৷ এই যুদ্ধের মূল কারন এবং বিচার প্রক্রিয়া হতে আমারা দেখি যে
, (1) বনু কোরাইযা গোত্র বার বার চুক্তি ভঙ্গ করে এবং রাসূল সাঃ তাদের বারবার ক্ষমা করেন এবং সুযোগ দেন ৷ ( পূর্বের post এ বলা হয়েছে)
(2) তারা কোরাইশদের পক্ষ নিয়ে রাসূলের সাঃ বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ৷
(3) বনু কোরাইযা গোত্র শর্তসাপেক্ষে পূর্বের মিত্র সাদ রাঃ এর নিকট আত্মসমর্পণ করেন ৷
(4) যেহেতু বনু কোরাইযা গোত্র শর্তসাপেক্ষে আত্মসমর্পণ করে ,সেহেতু রাসূল (সাঃ) বিচারে চুক্তি অনুযায়ী হস্তক্ষেপ করেন নাই ৷
(5)রাসূল সাঃ বনু কোরাইযার বিচার করেন নাই ৷ (6)গুরুতর আহত সাদ (রাঃ) ইহুদীদের বিধান অনুযায়ী সকল যোদ্ধাকে হত্যার নির্দেশ দেন
( বিঃদ্রঃ যোদ্ধাদের সংখ্যা ছিল 300/400 জন)
এবং নারী,শিশুদের কৃতদাস বানান ৷
(7)বনু কোরাইযা গোত্রের কোন নিরপরাধ ব্যাক্তির বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়নি বরং যারা মদীনার সকল মুসলমানকে হত্যা করতে চেয়েছিল, এবং যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, এমন যোদ্ধাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল ৷ আচ্ছা, কোন দেশ, ষ্ট্রদ্রোহীকে ক্ষমা করে?? প্রতিটি দেশে রাষ্ট্রদ্রোহীকে কি সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয়না?? আমাদের সময়ে রাষ্ট্রদ্রোহীদের শাস্তি যদি মৃত্যুদণ্ড হয় ,তবে বনু কোরাইযা গোত্রের শাস্তি কেন ভুল হবে?? এবং এই রায়ের জন্য রাসূল সাঃ কে কেন অপবাদ দেয়া হবে?
খায়বারের যুদ্ধ:
৬২৯ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন আরবের মদিনা নগরী থেকে ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মা) দুরে অবস্থিত খায়বার নামক মরুভূমিতে বসবাসরত ইহুদিগণের সাথে মুসলিমগণের সঙ্ঘটিত একটি যুদ্ধ। ৭ম হিজরিতে মদীনা আক্রমণ করার ব্যাপারে খায়বারের ইহুদীদের নতুন ষড়যন্ত্রের কারনে খায়বার যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে কাউকে বন্দি বা কতদাস বানানো হয় নাই ৷
বনু মুস্তালিকের যুদ্ধ: :
বনু মুছত্বালিকের সাথে মুসলিম বাহিনীর কোন যুদ্ধই হয়নি। বরং মুসলিম বাহিনী তাদের উপরে আকস্মিক হামলা চালালে তারা সব পালিয়ে যায় ও তাদের নারী-শিশুসহ বহু লোক বন্দী হয়। বন্দিদের মধ্যে গোত্রনেতা হারেছ বিন যিরারের কন্যা জুওয়াইরিয়া ( ﺟُﻮَﻳْﺮِﻳَﺔُ) ছিলেন। যিনি ছাবেত বিন ক্বায়েস-এর ভাগে পড়েন। ছাবেত তাকে ‘মুকাতিব’ হিসাবে চুক্তিবদ্ধ করেন। মুকাতিব ঐ দাস বা দাসীকে বলা হ’ত, যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ স্বীয় মনিবকে দেয়ার শর্তে চুক্তি সম্পাদন করে এবং উক্ত অর্থ পরিশোধ করার পর সে স্বাধীন হয়ে যায়। নবী করীম (ছাঃ) তার পক্ষ থেকে চুক্তি পরিমাণ অর্থ প্রদান পূর্বক তাকে মুক্ত করেন এবং গোত্র নেতার কন্যা হিসাবে তাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেন।
এই বিবাহের ফলশ্রুতিতে মুসলমানগণ বনু মুছত্বালিক গোত্রের বন্দী একশত পরিবারের সবাইকে মুক্ত করে দেন এবং তারা সবাই মুসলমান হয়ে যায়। এর ফলে তারা ‘রাসূল (ছাঃ)-এর শ্বশুর গোত্রের লোক’ ( ﺃَﺻْﻬَﺎﺭُ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ) বলে পরিচিতি পায়’ (আবুদাঊদ হা/৩৯৩১, সনদ হাসান)।
মক্কা বিজয় ::
নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) খ্রিস্টীয় ৬৩০ অব্দে রক্তপাতহীনভাবে মক্কা নগরী দখল করেন। ইতিহাসে এই ঘটনা মক্কা বিজয় নামে খ্যাত। এই যুদ্ধেও কাওকে কৃতদাস বানানো হয় নাই বরং রাসূল সাঃ আবু সুফিয়ান কেও ক্ষমা করে দেন ৷
হুনাইনের যুদ্ধ ::
মক্কা বিজয়ের পরই হেনাইনের যুদ্ধ হয় এই যুদ্ধে মুসলমানদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় কিন্তু যুদ্ধে জয়যুক্ত হয় এবং 6000 মুশরিক বন্দি হয় কিন্তু রাসূল সাঃ তাদের সকলকে সাধারন ক্ষমা ঘোষনা করেন ৷ কাওকেই কৃতদাস বানান নাই ৷ যদি চাইতেন তবে কত টাকায় এই সব বন্দিকে বিক্রি করতে পারতেন তা কি ভেবে দেখেছেন?? এত সব প্রমানের পরও কি নাস্তিকরা বলবে যে রাসূল সাঃ যুদ্ধ করেছেন শুধু হত্যা এবং দাস, দাসী বানানোর জন্য??
★যুদ্ধ বন্দিদের প্রতি বিধান গুলো নিম্নরূপ,
(1) অর্থ নিয়ে ছেড়ে দিতে পারবে,
(2) অর্থ ছাড়াও দয়া প্রদর্শন করে ছেড়ে দিতে পারবে ৷ (3) হত্যা করতে পারবে ৷
(4)বন্দিকে দাস বানাতে পারবে এবং লালন -পালনের, বা ভরন পোষনের সামর্থ না থাকলে অন্যের কাছে বিক্রি করতে পারবে ৷
(5) তবে মুসলমান হয়ে গেলে আর বন্দি রাখা যাবে না।
(6) নিজে যা খাবে, পরবে তাকেও তা খাওয়াতে ও পরাতে হবে ৷
(7) একটা থাপ্পর দিলেও, আযাদ না করলে জাহান্নামে যেতে হবে ৷
★রাসূল সাঃ যুদ্ধে কি করেছেন??
বদরের যুদ্ধ :
২ হিজরির ১৭ রমজান (১৩ মার্চ ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দ) মদিনার মুসলিম ও মক্কার কুরাইশদের মধ্যে সংঘটিত হয়। ইসলামের ইতিহাসে এটি প্রথম প্রধান যুদ্ধ। বদর ছিল দুই বাহিনীর মধ্যে প্রথম বড় আকারের যুদ্ধ। যুদ্ধে সুসংগঠিত মুসলিমরা মক্কার সৈনিকদের সারি ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয়। যুদ্ধে মুসলিমদের প্রধান প্রতিপক্ষ আবু জাহল নিহত হয় এবং 70 জন বন্দি হয় ৷ তাদের 2 জনকে অতীতের ভয়ংকর অপরাধের জন্য হত্যা করা হয় ৷ যারা সম্পদশালী ছিল তাদের কাছ হতে অর্থ নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় ৷ যারা শিক্ষিত ছিল তাদের প্রত্যেককে 10 জন মুসলমানকে শিক্ষা দানের বিনিময় মুক্তি দেয়া হয় এবং যারা গরিব ও অশিক্ষিত তাদের বিশেষ ক্ষমা প্রদান করা হয় ৷
উহুদের যুদ্ধ :
৩ হিজরির ৭ শাওয়াল (২৩ মার্চ ৬২৫ খ্রিষ্টাব্দ) উহুদ পর্বতের সংলগ্ন স্থানে সংঘটিত হয়।[২] মদিনার মুসলিম ও মক্কার কুরাইশদের মধ্যে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এই দুই পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন যথাক্রমে মুহাম্মাদ (সা) ও আবু সুফিয়ান। ইসলামের ইতিহাসে সংঘটিত প্রধান যুদ্ধসমূহের মধ্যে এটি দ্বিতীয়। এর পূর্বে ৬২৪ সালে এই দুইপক্ষের মধ্যে বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল৷ এই যুদ্ধে রাসূলের সাঃ চাচা হামজা রাঃ সহ 70 জন সাহাবী শহীদ হয় ৷কোন মুশরিক বন্দি হয় নাই ৷
খন্দকের যুদ্ধ বা আহযাবের যুদ্ধ::
৫ হিজরিতে (৬২৭ খ্রিষ্টাব্দ) সংঘটিত হয়। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। জোট বাহিনীর সেনাসংখ্যা ছিল প্রায় ১০,০০০ এবং সেসাথে তাদের ৬০০ ঘোড়া ও কিছু উট ছিল। অন্যদিকে মদিনার বাহিনীতে সেনাসংখ্যা ছিল ৩,০০০। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে মুহাম্মাদ (সা) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন।প্রাকৃতিকভা বে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণকারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কুরাইজা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়।
বনু কুরাইজার যুদ্ধ::
খন্দকের যুদ্ধের পর কোরাইশদের সহযোগি এই গোত্রের সাথে মুসলিমদের যুদ্ধ হয় ৷ তারা দুর্গের মধ্যে অবস্থান নেয় ৷যথারীতি অনেকদিন দূর্গের মধ্যে অবরূদ্ধ থেকে যখন তারা দেখলো যে খায়বার থেকে ইহুদী বাহীনির আসার কোনোই সম্ভবনা নেই তখন তারা আত্মসমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে রাসুল (সাঃ) এর কাছে আত্মসমর্পন না করে তারা তাদের পুরোনো মিত্র সাদ-বিন- মুয়াদের (রাঃ) কাছে নিজেদের ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেয়।সাদ রাঃছিলেন যুদ্ধে আহত যোদ্ধাদের একজন ৷
রাসূলের অনুপস্থিতে ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থের বিধান অনুযায়ী সাদ (রাঃ)বিচার করেন এবং সিদ্ধান্ত দেন কুরাইযা গোত্রের সকল যোদ্ধাদের প্রাণদণ্ড দেয়া হোক আর মহিলা ও শিশুদের বন্দী করা হোক। রায় দেয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই গুরুতর আহত সাদ (রাঃ) মারা যান ৷ এই যুদ্ধের মূল কারন এবং বিচার প্রক্রিয়া হতে আমারা দেখি যে
, (1) বনু কোরাইযা গোত্র বার বার চুক্তি ভঙ্গ করে এবং রাসূল সাঃ তাদের বারবার ক্ষমা করেন এবং সুযোগ দেন ৷ ( পূর্বের post এ বলা হয়েছে)
(2) তারা কোরাইশদের পক্ষ নিয়ে রাসূলের সাঃ বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ৷
(3) বনু কোরাইযা গোত্র শর্তসাপেক্ষে পূর্বের মিত্র সাদ রাঃ এর নিকট আত্মসমর্পণ করেন ৷
(4) যেহেতু বনু কোরাইযা গোত্র শর্তসাপেক্ষে আত্মসমর্পণ করে ,সেহেতু রাসূল (সাঃ) বিচারে চুক্তি অনুযায়ী হস্তক্ষেপ করেন নাই ৷
(5)রাসূল সাঃ বনু কোরাইযার বিচার করেন নাই ৷ (6)গুরুতর আহত সাদ (রাঃ) ইহুদীদের বিধান অনুযায়ী সকল যোদ্ধাকে হত্যার নির্দেশ দেন
( বিঃদ্রঃ যোদ্ধাদের সংখ্যা ছিল 300/400 জন)
এবং নারী,শিশুদের কৃতদাস বানান ৷
(7)বনু কোরাইযা গোত্রের কোন নিরপরাধ ব্যাক্তির বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়নি বরং যারা মদীনার সকল মুসলমানকে হত্যা করতে চেয়েছিল, এবং যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, এমন যোদ্ধাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল ৷ আচ্ছা, কোন দেশ, ষ্ট্রদ্রোহীকে ক্ষমা করে?? প্রতিটি দেশে রাষ্ট্রদ্রোহীকে কি সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয়না?? আমাদের সময়ে রাষ্ট্রদ্রোহীদের শাস্তি যদি মৃত্যুদণ্ড হয় ,তবে বনু কোরাইযা গোত্রের শাস্তি কেন ভুল হবে?? এবং এই রায়ের জন্য রাসূল সাঃ কে কেন অপবাদ দেয়া হবে?
খায়বারের যুদ্ধ:
৬২৯ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন আরবের মদিনা নগরী থেকে ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মা) দুরে অবস্থিত খায়বার নামক মরুভূমিতে বসবাসরত ইহুদিগণের সাথে মুসলিমগণের সঙ্ঘটিত একটি যুদ্ধ। ৭ম হিজরিতে মদীনা আক্রমণ করার ব্যাপারে খায়বারের ইহুদীদের নতুন ষড়যন্ত্রের কারনে খায়বার যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে কাউকে বন্দি বা কতদাস বানানো হয় নাই ৷
বনু মুস্তালিকের যুদ্ধ: :
বনু মুছত্বালিকের সাথে মুসলিম বাহিনীর কোন যুদ্ধই হয়নি। বরং মুসলিম বাহিনী তাদের উপরে আকস্মিক হামলা চালালে তারা সব পালিয়ে যায় ও তাদের নারী-শিশুসহ বহু লোক বন্দী হয়। বন্দিদের মধ্যে গোত্রনেতা হারেছ বিন যিরারের কন্যা জুওয়াইরিয়া ( ﺟُﻮَﻳْﺮِﻳَﺔُ) ছিলেন। যিনি ছাবেত বিন ক্বায়েস-এর ভাগে পড়েন। ছাবেত তাকে ‘মুকাতিব’ হিসাবে চুক্তিবদ্ধ করেন। মুকাতিব ঐ দাস বা দাসীকে বলা হ’ত, যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ স্বীয় মনিবকে দেয়ার শর্তে চুক্তি সম্পাদন করে এবং উক্ত অর্থ পরিশোধ করার পর সে স্বাধীন হয়ে যায়। নবী করীম (ছাঃ) তার পক্ষ থেকে চুক্তি পরিমাণ অর্থ প্রদান পূর্বক তাকে মুক্ত করেন এবং গোত্র নেতার কন্যা হিসাবে তাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেন।
এই বিবাহের ফলশ্রুতিতে মুসলমানগণ বনু মুছত্বালিক গোত্রের বন্দী একশত পরিবারের সবাইকে মুক্ত করে দেন এবং তারা সবাই মুসলমান হয়ে যায়। এর ফলে তারা ‘রাসূল (ছাঃ)-এর শ্বশুর গোত্রের লোক’ ( ﺃَﺻْﻬَﺎﺭُ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ) বলে পরিচিতি পায়’ (আবুদাঊদ হা/৩৯৩১, সনদ হাসান)।
মক্কা বিজয় ::
নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) খ্রিস্টীয় ৬৩০ অব্দে রক্তপাতহীনভাবে মক্কা নগরী দখল করেন। ইতিহাসে এই ঘটনা মক্কা বিজয় নামে খ্যাত। এই যুদ্ধেও কাওকে কৃতদাস বানানো হয় নাই বরং রাসূল সাঃ আবু সুফিয়ান কেও ক্ষমা করে দেন ৷
হুনাইনের যুদ্ধ ::
মক্কা বিজয়ের পরই হেনাইনের যুদ্ধ হয় এই যুদ্ধে মুসলমানদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় কিন্তু যুদ্ধে জয়যুক্ত হয় এবং 6000 মুশরিক বন্দি হয় কিন্তু রাসূল সাঃ তাদের সকলকে সাধারন ক্ষমা ঘোষনা করেন ৷ কাওকেই কৃতদাস বানান নাই ৷ যদি চাইতেন তবে কত টাকায় এই সব বন্দিকে বিক্রি করতে পারতেন তা কি ভেবে দেখেছেন?? এত সব প্রমানের পরও কি নাস্তিকরা বলবে যে রাসূল সাঃ যুদ্ধ করেছেন শুধু হত্যা এবং দাস, দাসী বানানোর জন্য??
No comments:
Post a Comment