Tuesday, June 13, 2017

★নাস্তিক ও অহিন্দুদের ব্যাপারে হিন্দুধর্ম কি বলে?

হিন্দ বা হিন্দু ধর্মের গ্রন্থগুলিতে যুদ্ধের ব্যপক বর্ণনা রয়েছে । ভারতের ধর্মভিত্তিক কাব্য গ্রন্থ মহাভারত এবং রামায়নের মূলবিষয় ইহল যুদ্ধ বিগ্রহ , হানাহানী, মারামারি । মহাভারতের উদ্যোগ পর্ব, ভীষ্ম পর্ব, দ্রোন পর্ব, কর্ণপর্ব, শল্যপর্ব, প্রভৃতিতে যুদ্ধের ধ্বংসলীলার কথা বর্ণিত হয়েছে। ভারতের বুকে অতীতে যে রক্ত গঙ্গা প্রবাহিত হয়েছিল তার বর্ণনা ঐ সব পর্বে বিস্তারিত ভাবে বিবৃত হয়েছে । রামায়নের রাম বাবনের যুদ্ধের কাহিনী কবি বাল্মিকীর বিষয় বস্তু । মহাভারতের একটি অংশের নাম গীতা । গীতা অর্থ গীত বা গান । কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে এই গান রচিত হয়েছিল । কৃষ্ণ (কাল) অর্জুন (সাদা) প্রতীকের মাধ্যমে কথোপকথন এই গানের বিষয়বস্তু ।

গীতার মতে যুদ্ধক্ষেত্র কুরক্ষেত্র, ধর্মক্ষেত্ররূপে স্বীকৃত । ধর্মক্ষেত্রে কুরুক্ষেত্রে সমবেত যুযুৎসব I অর্জুন শুভ্র বা কোমল অন্তরের মানুষ । তিনিযুদ্ধ, হত্যা রক্তপাত পছন্দ করতেন না । তিনি ছিলেন যুদ্ধবিরোধী শান্তি প্রিয় সাদা অন্তরের মানুষ । অপরদিকে কৃষ্ণরূপে যাকে চিত্রিত করা হয়েছে তিনি ছিলেন যুদ্ধের পক্ষে । হত্যা এবং ধ্বংস তার কাছে অতি সাধারণ বিষয় অর্জুন যখন বললেন, আমি যুদ্ধ করব না তখন কৃষ্ণ বললেন  হে পার্থ কাতর হইওনা ।
 এই পৌরুষ হীনতা তোমাকে শোভা পায়না(২/৩)।
 প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তিরা কি মৃত, কি জীবিত কাহারও জন্য শোক করেন না (২/১১) ।
 গতানূগতা সূংশ্চনানু শোচন্তি পন্ডিত । অতএব তুমি যুদ্ধ কর (২/১৮)
যুধ্যস্ব ভারত । ধর্ম যুদ্ধ অপেক্ষ ক্ষত্রিয়ের পক্ষে শ্রেয় আর কিছু নাই । ধর্মাদ্ধি যুদ্ধাচ্ছ্রেয়োহনাৎ ক্ষত্রিয়স্য নবিদ্যতে (২/৩১)
হত বা প্রাপ্ন্যসি স্বর্গ জিত্বাবা ভোক্ষ্য সেম হীম (২/৩৭)
এই যুদ্ধে হত হলে স্বর্গ লাভ আর জয়ী হলে পৃথি বীলাভ ।

এত সব লোভনীয় বক্তব্যের পরও অর্জুন অস্ত্র ত্যাগ করে বসে আছেন । তিনি কোন মতেই যুদ্ধ করবেন না ।
 অপরদিকে কৃষ্ণ বার বার বলে যাচ্ছেন, নিরাশী নির্মমোভূত্বা যুধ্যস্ব বিগত জ্বর(৩/৩০)
কামনা ও মমতা শূণ্য হয়ে শোক ত্যাগ করে তুমি যুদ্ধ কর ।গীতা কোন আবতীর্ণ গ্রন্থ নয় । কুরুক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে অবতার কৃষ্ণ এহেন দীর্ঘ বক্তৃতা প্রদান করেছিলেন বলেও গুণীজন বিশ্বাস করেন না ।
বঙ্কিম চন্দ্র চট্রোপাধ্যায় বলেছেন , গীতা গ্রন্থখানী ভগবত প্রণীত নহে, অন্য ব্যক্তি ইহার প্রনেতা ( রচনাবলী,৬৯৩পৃঃ )
তিনি আরো বলেছেন, যুদ্ধ ক্ষেত্রে উভয় সেবার সস্মুলে রথ স্থাপিত করিয়া কৃষ্ণার্জুনে যথার্থ এইরূপ কথোপকথন যে হইয়াছিল তাহা বিশেষ সন্দেহ (রচনাবলী ) অনেকের মতে গীতা শঙ্করাচার্য প্রণীত । রচনার পর এটিকে মহাভারতে ঢুকিয়ে দেয়া হয়
(ভারতেবিবেকানন্দ, ৪২৪পৃঃ)

হিন্দুধর্ম অনুযায়ী যারা নাস্তিক ও অহিন্দু  তাদেরকে   পা দিয়ে মাড়িয়ে হত্যা করা, তাদের উপর রাগান্বিত হওয়া,তাদের ধনসম্পদ ছিনিয়ে আনা এবং তাদের সাথে যুদ্ব করে গনিমত হিসেবে তাদের সম্পদকে ও মহিলাদের   হস্তগত করা ইত্যাদি সকল কাজই বৈধ।কিন্তু বহুকাল পর্যন্ত হিন্দুধর্ম সম্পর্কে মানুষ না জানার কারনে এই চিনিসগুলো জানতো না কারন হিন্দু ধর্ম সকলের পড়ার অনুমতি ছিল না ।এখন ইন্টারনেটের কারনে মানুষ আস্তে আস্তে এ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতেছে।নিম্নে হিন্দু ধর্মে   নাস্তিক ও অহিন্দুদের ব্যাপারে কি বলা হয়েছে সে  সম্পর্কে সামান্য আলোকপাত করা হল-

★“যে লোক ঈশ্বরের আরাধনা করে না এবং যার মনে ঈশ্বরের প্রতি অনুরাগ নেই,তাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে হত্যা করতে হবে।” (ঋগবেদ ১।৮৪।৮)

“তাদেরকে হত্যা কর, যারা বেদ ও উপাসনার বিপরীত।” অথর্ববেদ ২০/৯৩/১,

এই ব্যাপারে সরাসির বেদাঙ্গ এ রয়েছে, যারা অবিশ্বাসী ও ঈশ্বরের আরাধনা করে না তাদেরকে পাড়িয়ে মারার কথা।
নিরুক্ত ৫/১৭ ,


★“হে ঈশ্বর,যারা দোষারোপ করে বেদ ও ঈশ্বরের তাদের উপর তোমার রাগ বর্ষণ কর।”
                                       (ঋগবেদ ২।২৩। ৪
এর কমেন্টারিতে স্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতি লিখেছেন,  “যারা বেদ ও ঈশ্বর বিরোধি তারা হচ্ছে পাপী, এটাই হচ্ছে পার্থক্য ঈশ্বরের ভজনকারী ও অবিশ্বাসীর মধ্যে।”

★গবাদিপশুগুলো কি করছে নাস্তিকদের এলাকায়,যাদের বৈদিক রীতিতে বিশ্বাস নেই? যারা সোমার সাথে দুধ মিলিয়ে উতসর্গ করে না এবং গরুর ঘি প্রদান করে যজ্ঞও করে না? ছিনিয়ে আনো তাদের ধনসম্পদ আমাদের কাছে”। (ঋগবেদ ৩।৫৩।১৪)

স্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতি এর কমেন্টারিতে লিখেছে,“আলোকিত মানুষদের(আর্য) মধ্যে নাস্তিকরা কখনোই বেড়ে উঠবে না। এজন্য একজন জ্ঞানীর উচিত নাস্তিকতাবাদকে সমুলে উৎপাটন করে ফেলা।”


★কীকটবাসী [বেদের বাহিরের লোক] তাহারা গাভীর কি উপযোগ নেয়, না পানযোগ্য দুধ আদি দোহন করে, এবং না ঘৃতকে উত্তপ্ত করে। হে ঐশ্বর্যবান! নিজ ধন আমোদ প্রমোদে ব্যয়কারী পুরুষের ধনকে আমাদের প্রাপ্ত করাও আমাদের মধ্যে কুপ্রবৃত্তিবান লোক কে দমন করো "। (ঋগবেদ ৩/৫৩/১৪, জয়দেব শর্মা)

★“সেনাপ্রধান হিংস্র ও নির্দয়ভাবে শত্রুদের পরিবারের সদস্যদের সাথেও যুদ্ধ করবে।”(যজুর্বেদ ১৭।৩৯)

" এবং যজুর্বেদ ৭/৪৪ বলা হয়েছে, তাদের যুদ্ধের মাধ্যম বশ্যতা স্বীকার করাতে হবে”।

“শত্রূদের পরিবারকে হত্যা করো,তাদের জমি ধংস করো”। (যজুর্বেদ ১৭/৩৮)

"হে সেনাপ্রধান,আমাদের আশা পুর্ণ করো। হে ধনসম্পদের বাদশা,তোমার সহায়তায় আমরা যেন সম্পদশালী হতে পারি এবং যুদ্ধে জয় লাভ করে প্রচুর ধন সম্পদের মালিক হতে পারি।” (যজুর্বেদ ১৮/৭৪)

★বেদ অনুসারে যে ব্যাক্তি কোন ব্রাক্ষণের ক্ষতি করে দেখুন তার প্রতি কি আদেশ,
“যে ব্যাক্তি ব্রাক্ষণের ক্ষতি করে ব্রাক্ষণের গরু নিজের কাজে লাগায়, তাকে ধংস করে দাও।”
                                   (অথর্ববেদ ১২/৫/৫২,)
 এই সুক্তেরই ৬২ নাম্বার মন্ত্রে আর্য সমাজের মুল ওয়েবসাইটে বলা আছে,
 “তু বেদ নিন্দুককো কাট ডাল, চির ডাল, ফাড় ডাল, জ্বালা দে, ফুক দে, ভষ্ম কর দে,”
অর্থাৎ বেদের নিন্দাকারীকে, কেটে ফেল, চিড়ে ফেল,ফেড়ে ফেল,জ্বালিয়ে দাও,ফুকে দাও,ভষ্ম করে দাও। (অথর্ববেদ ১২/৫/৬২,)

অথর্ববেদ ১২/৫/৫৪ এর কমেন্টারিতে তারা লিখেছে,“বেদানুযায়ী সত্যবীর পুরুষ নাস্তিকোকা নাশ করে”
অর্থঃ বেদ অনুযাই সত্যবীর পুরুষ নাস্তিকদের হত্যা করবে।

★শত্রুদের হত্যা কর ও তাদের জায়গা জমী ও রান্নাঘর ধংস কর। (যজুর্বেদ ১৩/১৩),

 “যুদ্ধই তোমাদের উন্নতির উৎস, এজন্যই তোমাদেরকে আমি যুদ্ধে প্রেরন করি”
 (যজুর্বেদ ৭/৩৮,)

★বেদাংগেও আছে,
শত্রুদের ধংস করে তাদের সম্পদ কেড়ে আনো। তাদের সম্পদ ও খাদ্য ঘর থেকে ছিনিয়ে আনো।”( নিরুক্ত ৪/৫ ,)


★গাড়ি, ঘোড়া, হাতি, অর্থ, শস্য , গবাদিপশু ও নারী তার দখলে যে যুদ্ধের মাধ্যমে তা জয় করে। (মনুসংহিতা ৭/৯৬,)
অর্থাৎ শত্রু পরিবারের নারীরাও যাবে দখলকারীর ভোগের জন্য।

আর যজুর্বেদ ২৯/৩৯ এ, এভাবেই যুদ্ধে ধনসম্পদ লুট খুনের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্ব দখল করতে বলছে। এবং একিসাথে এই মন্ত্রে স্পষ্টভাবে কোন আত্তরক্ষার্থে নয় বরং যারা শান্তিপ্রিয় তাদেরকে আক্রমন করে দখল করতে বলছে,
 “আমরা যেন সামরিক অস্রের মাধ্যমে বিশ্ব দখল করতে পারি, আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আমরা যেন শান্তিপ্রিয় বা আরামপ্রিয় শত্রুদের বিরুদ্ধে জয় লাভ করতে পারি। এভাবে অস্র দিয়ে আমরা যেন সারা বিশ্বের সকল অঞ্চলকে বশ্যতা স্বীকার করাতে পারি।”

এজন্যই বেদ শ্রদ্ধা নিবেদন করে তার প্রতি যার রয়েছে অস্র।
“তার প্রতি শ্রদ্ধা, যার রয়েছে তলোয়ার, তীর। তার প্রতি সন্মান যার রয়েছে ধারালো অস্র। তার প্রতি খাদ্য নিবেদন যার রয়েছে ভাল অস্র।” (যজুর্বেদ ১৬/৩৬,)
সম্মানিত পাঠক উপরের আলোচনা থেকেই চিন্তা করে দেখুন হিন্দুধর্মের যুদ্বনীতী কত জটিল ও মারাত্নক যেখানে শান্তিপূর্ন অবস্হায়ও আক্রমন করা যাবে।বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে করুন-https://m.facebook.com/notes/md-rafat-rahman/বেদ-এ-অমানবিকতা-ও-নাস্তিক-অবিশ্বাসী-হত্যার-বিধানঃ/1476690319305165/










No comments:

Post a Comment